আল জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই
সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় সম্প্রতি প্রচারিত প্রতিবেদন নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, আল জাজিরার একটি প্রতিবেদন নিয়ে তারা (বিএনপি) বানরের মতো নাচানাচি করছে। এতে কোনো লাভ হচ্ছে না। এ নিয়ে আমরা মোটেও উদ্বিগ্ন নই।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সম্প্রতি বলেছেন, আল জাজিরায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার দিল্লির সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। জনগণ সঙ্গে না থাকলে দিল্লি দৌড়ে লাভ হবে না। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে নিচ্ছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রিজভী সাহেব মাঝে মধ্যে কিছু উদ্ভট কথা বলেন। তার চিরাচরিত উদ্ভট কথার মধ্যে এটিও একটি।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক বহুদিনের। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী; যে ভারত আমাদের দেশের তিন দিকে পরিবেষ্টিত হয়ে আছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সব সময় সুসম্পর্ক। বর্তমান ভারত সরকারের সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেই সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে।’
এর আগে আল জাজিরার ওই প্রতিবেদনকে বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রাজনৈতিক মদতপুষ্ট অপপ্রচার আখ্যায়িত করে বিবৃতি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার আল জাজিরা নিউজ চ্যানেলের ‘‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’’ শিরোনামে প্রচারিত একটি মিথ্যা ও মানহানিকর প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে পেরেছে। এটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিকর সিরিজ, যা উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কুখ্যাত ব্যক্তিদের যোগসাজশে রাজনৈতিক মদতপুষ্ট অপপ্রচার বলে স্পষ্ট। একাত্তরে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রগতিশীল এবং ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরোধিতা করছে সংগঠনটি।’
প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ বাঙালিকে হত্যা ও দুই লাখ নারীকে ধর্ষণে জামায়াতের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করা হয়নি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি আল জাজিরার রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক প্রচারণার প্রতিচ্ছবি। এর প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানকে মুক্তিযুদ্ধে সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা চ্যালেঞ্জের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটি লক্ষণীয় যে, আল জাজিরার অভিযোগের মূল ‘উৎস’ হলেন একজন কথিত আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল জাজিরা নিজেই ‘মানসিক রোগী’ বলে দাবি করেছে। প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের অন্য সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে ওই ব্যক্তির যোগসাজশের ছিটেফোঁটা প্রমাণও নেই। মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ কোনো ব্যক্তির কথার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের পক্ষে অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন।’
‘উগ্রপন্থী ও তাদের লন্ডন ও অন্য জায়গায় তৎপর মিত্রদের মাধ্যমে প্ররোচিত এ মরিয়া অপপ্রচার প্রত্যাখ্যান করছে বাংলাদেশ সরকার। আফসোস এটা যে, বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে অপপ্রচারকারীদের বিষাক্ত রাজনৈতিক নকশার একটি অস্ত্র হতে নিজেকে সঁপে দিয়েছে আল জাজিরা।’
এসএইচআর/এসএসএইচ