খালের জায়গা দখল হলো, আপনারা কেন দেখলেন না
উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে কথা বলেন ডিএসসিসি মেয়র তাপস
খালের জায়গা দখল হলো, আপনারা কেন দেখলেন না। রাজধানীর মান্ডা খালের চলমান বর্জ্য অপসারণ ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মান্ডা খালের (রাজধানীর বাসাবো ও মুগদা এলাকার পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম) চলমান বর্জ্য অপসারণ ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে যান মেয়র।
বিজ্ঞাপন
মেয়র তাপস বলেন, গতবার যখন আমি এখানে এসেছি তখন এগুলো দখল ছিল না, এটা নতুনভাবে দখল হয়েছে। ওইদিকে দখল করছে, এখনই বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন (কর্মকর্তাদের) এটা। এখানে এই টিনের শেড ছিল না, এরা নতুনভাবে দখল করেছে। আপনাদের সামনে এটা হয়ে গেল, আপনারা দেখলেন না কেন?
পাশে থাকা এক কর্মকর্তা এসময় মেয়রকে বলেন, এরা ব্যক্তিগত কাগজ দেখিয়ে করেছে স্যার। উত্তরে মেয়র বলেন, ঘোড়ার ডিম ব্যক্তিগত কাগজ দেখিয়েছে। ৬ মাস আগেও খোলা ছিল এখানে, তাহলে কিসের ব্যক্তিগত কাগজ। এগুলো সব খোলা ছিল। এগুলো সব দখল করছে তারা। এসব বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন।
বিজ্ঞাপন
মেয়র তাপস বলেন, সম্পত্তি বিভাগের লোকজন, স্থানীয় কাউন্সিলর কই? এগুলো কীভাবে হলো জবাব দিন। মেয়রের এমন প্রশ্নের জবাবে সম্পত্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, স্যার সার্ভেয়ার সঙ্গেই এনেছি, আজই সব মেপে দেখছি।
মান্ডা খালের চলমান বর্জ্য অপসারণ ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র তাপস বলেন, খালগুলো থেকে বর্জ্য অপসারণ এবং অবৈধ দখলমুক্তের অভিযান চলমান রয়েছে। যত প্রভাবশালী হোক না কেন আমাদের কাজকে কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকে খাল দখলমুক্ত এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছি। যতই প্রভাবশালী হোক না কেন কেউ আমাদের কাজকে ব্যাহত করতে পারবে না।
তিনি বলেন, শ্যামপুর খাল ১০০ ফুট ছিল, তা দখল হয়ে খালের মাত্র ৮ ফুট জায়গা আমরা পেয়েছিলাম। সেটি আমরা দখলমুক্ত করেছি, আরও কাজ চলছে। একই রকম অবস্থা প্রায় সব খালেরই। সব খালেই আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আজ আমরা মান্ডা খালে এসেছি, এখানেও দেখতে পাচ্ছি নতুন করে কিছু দখল হয়েছে। আমরা আজ থেকে এখানেও ব্যবস্থা নেব।
ডিএসসিসি মেয়র জানান, এ পর্যন্ত অভিযানের ৪৫ দিনে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন বর্জ্য এবং মাটি আমরা খাল থেকে অপসারণ করেছি। ৩১ মার্চ পর্যন্ত আরও গতিশীলভাবে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত করব। আমাদের লক্ষ্য বর্ষা মৌসুমে যেন বৃষ্টির পানি সঠিকভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
তাপস আরও বলেন, আমাদের এখন যে বড় প্রতিকূলতা দেখা দিয়েছে তা হলো, আমরা ওয়াসা থেকে যে পাম্প স্টেশন পেয়েছি সেগুলো অচল, আমরা এগুলো এখনও চালু করতে পারিনি। আমরা বিশেষজ্ঞ এবং কারিগরি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে কাজ করাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা যদি পাম্প স্টেশনগুলো চালু করতে না পারি, তাহলে পানি নিষ্কাশন আমাদের জন্য দুরূহ অবস্থা হয়ে দাঁড়াবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আশা করছি আগামী এপ্রিলের মধ্যে আমরা এগুলো চালু করতে পারব।
দক্ষিণ সিটি মেয়র আরও বলেন, আগামী মার্চের মাঝামাঝি গিয়ে আমাদের কাজের কৌশল এবং পরিকল্পনা কিছুটা ঢেলে সাজাব। সে সঙ্গে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম প্রসারিত করব। যদিও এই কার্যক্রম অত্যন্ত দুরূহ কাজ তবুও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এই গতিতে যদি আমাদের কাজ চলমান রাখতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ্ জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই নিরসন হবে এবং ঢাকাবাসীকে জলবদ্ধতা থেকে মুক্তির সুফল কিছুটা হলেও দিতে পারব।
মান্ডা খালে চলমান বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/জেডএস