বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) রিজিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১ জুন) মিয়ানমারের মংডুতে বিজিবি-বিজিপি রিজিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের কমান্ডার, নম্বর (১) কমান্ডিং অফিস, মংডুর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হটেট লুইনের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের বিজিপি প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন সদর দপ্তরের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম-উস-সাকিবের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল মিয়ানমারের মংডুতে পৌঁছালে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। বিজিবি প্রতিনিধি দলের প্রধানকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) কর্তৃক ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পাচার, অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতিকারীদের ক্যাম্প, আস্তানা অপসারণ, সীমান্তে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) স্থাপন, মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়ায় বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন, অসতর্কতা/ভুলবশত আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশের পর আটককৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত ফেরত প্রদানের বিষয়টি ত্বরান্বিত ও সহজীকরণ, সীমান্তের নানাবিধ সমস্যা নিরসনকল্পে উভয় দেশের বর্ডার লিঁয়াজো অফিসের (বিএলও) কার্যক্রম পূর্ণরূপে সক্রিয়করণ, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে যৌথ সমন্বিত টহল পরিচালনা ও পিলার পরিদর্শন ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বিস্তারিত ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

এছাড়াও সম্মেলনে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে স্বদেশে প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষমাণ বাংলাদেশি নাগরিকদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্নের বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে বিজিবি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে স্বদেশে প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষমাণ ৪ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।

সম্মেলনে সীমান্তবর্তী জনসাধারণের নিরাপত্তা ও সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয় প্রতিনিধিদলের প্রধান একসঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সম্মেলন শেষে বুধবার (১ জুন) বিকেলে বিজিবি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ সীমান্ত সম্মেলন ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। 

জেইউ/ওএফ