নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রাপ্য সেবা ও সব ধরনের নাগরিক অধিকারের দাবি আদায়সহ ছয় দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রতিবন্ধী ঐক্য সমাজ। সোমবার (৬ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে মৌলিক অধিকার, নাগরিক নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা, কর্মক্ষেত্রে সহায়তা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বুদ্ধিবৃত্তি চর্চার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিল্পী আক্তার বলেন, ঢাকা মহানগরের উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রতিবন্ধী রয়েছেন। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ করতে গেলে অর্থাৎ রিকশা চালানোসহ অন্যান্য কাজ করতে গেলে প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হতে হয়। 

সকালে অহেতুক জরিমানা, বিকেলে রেকার বিল, রাতে ডাম্পিং। রেকার করলে ১২’শ এবং ডাম্পিং করলে ৫ হাজার টাকা রিকশাপ্রতি জরিমানা দিতে হয়। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধী ভাইকে রিকশা থেকে নামিয়ে পুলিশ মারধর করছে, অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছে। আমরা অসহায়। রাষ্ট্রের কাছে এর প্রতিকার চাই। দয়া করে আমাদের দিকে একটু তাকান। 

প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে করে প্রতিবন্ধী মো. হাসমত আলী বলেন, মাগো একটু চাইয়া দেখেন। আমার একটা হাত নাই। মেয়ে বিয়ে দিতে গেলে বলে বাবায় ভিক্ষা করে। ছেলেরে শিক্ষিত করছি। বিয়ে দিতে গেলে বলে ছেলে তো ভালো। কিন্তু বাপে তো ভিক্ষা করে। তাহলে দেখুন, আমরা সমাজে কী রকম অবহেলিত। মাগো আপনার কাছে আমার অনুরোধ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, দয়া করে আমাদের একটু দেখুন, একটু তাকান। আমাদের যদি না দেখেন আমরা কই যামু?

প্রতিবন্ধী মো. মোরশেদ আলম বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আমরা ব্যাটারিচালিত গাড়ি চালাই। অথচ এটি নিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয়। গাড়িটিই ছিল আমার জীবিকার একমাত্র সম্বল। গাড়িটি নিয়ে যাওয়ার পর আজ দেড় মাস ধরে পরিবার নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছি। আমার এক মেয়ে মাদরাসায় ক্লাস নাইনে পড়ে, আমার এক ছেলে স্কুলে পড়ে। ছেলেটাকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আমাদের কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিন যাতে দুমুঠো ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারি। ভিক্ষা নয়, আমরা কর্ম করে বাঁচতে চাই।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধী ঐক্য সমাজের মোহাম্মদ জামাল খান, মো. মোরশেদ আলম, মো. মোশারফ, আলমগীর, মো. আল-মাহমুদ হোসেন।

এইচআর/আরএইচ