কুসিক নির্বাচনে কমিশনের অসহায়ত্ব আগামীর জন্য অশনি সংকেত : সুজন
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কুমিল্লার একজন জনপ্রতিনিধির আচরণ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের অসহায়ত্ব আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত। কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাই কমিশন জনগণের নিকট দায়বদ্ধ। কমিশনকে সবসময় জনগণের স্বার্থে ভালো সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে।
সোমবার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার আহ্বানে সুজন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সুজন সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা আছে। তার উচিত তা যথাযথ বাস্তবায়ন করা। নতুন কমিশনের কুসিক নির্বাচন পরবর্তী দিনের নির্দেশনা দেবে। কমিশনের অসহায়ত্বে আমরাও অসহায়ত্ব বোধ করছি। কমিশনের অসহায়ত্ব কোনভাবেই কাম্য নয়। আমরা নির্বাচন কমিশনের সাহসিকতা ও পদক্ষেপগুলো দেখব এবং বিশ্লেষণ করব। সুজন শুধু নির্বাচনের ফল নয়, বরং নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দীলিপ কুমার সরকার, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেনসহ সুজনের নেতারা।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, প্রার্থীদের শিক্ষার মান কমেছে। ব্যবসায়ী সংখ্যা বেড়েছে। সুশাসক ও আইনবিদদের সংখ্যা কমেছে। কুসিক নির্বাচনে প্রার্থীদের ৬২ জন এসএসসি পাস এবং ৩৯ জন মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হতে পারেননি। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে আমাদের জন্য যাতনার বিষয় এই যে, অনেক রক্তের বিনিময়ে ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধশতাব্দী অতিবাহিত হলেও, এখনো একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমাদের পথচলার অবসান হয়নি।
আজও অবসান হয়নি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সাধারণ মানুষের বঞ্চনার। আর এ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বঞ্চনার অবসান না হওয়ার অন্যতম কারণ দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন, যা সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের উত্থানের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে আমাদের। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহও দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের বাইরে নয়। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা আজও যেমন আমাদের কাছে স্বপ্ন, তেমনি ক্ষমতা, দায়িত্ব ও সম্পদে সমৃদ্ধ, সুব্যবস্থাপনাধীন, দুর্নীতিমুক্ত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমানতাও আমাদের আকাঙ্ক্ষা। ঠিক এমনি একটি পরিস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
বক্তারা আরো বলেন, নাগরিকদের সচেতনতা, সক্রিয় ভূমিকা এবং সঠিক সিদ্ধান্তই পারে স্বপ্নপূরণ ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দিকে আমাদের এগিয়ে নিতে। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন ভোটারদের সামনে তেমনি একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাররা মহানগরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। দেশের মালিক হিসাবে সৎ ও যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন প্রত্যেক নাগরিকের নৈতিক ও অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। কিন্তু ভোটাররা যদি আসন্ন নির্বাচনে অসৎ ও অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, তাহলে তার অপকর্মের জন্য তারাও অনেকাংশে দায়ী থাকবেন। টাকা-পয়সা বা অন্য কোন সুবিধার বিনিময়ে যদি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হয়, তবে তা হবে নাগরিকদের বিবেক বিক্রির শামিল।
আরএইচ