প্রাকৃতিক জল ধারণ এলাকা সংরক্ষণের বিকল্প নেই
দেশ ও জনগণকে রক্ষায় প্রাকৃতিক জল ধারণ এলাকা সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) ওয়ার্ক ফর অ্যা বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বন্যা পরিস্থিতি : নদী খাল ও জলাধার সংরক্ষণের গুরুত্ব ও করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় আলোচকরা এ কথা বলেন।
বর্তমানে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কারণে জনজীবনে অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এ ভয়াবহ বন্যার পেছনে বাংলাদেশসহ ভারতের আসাম, মেঘালয়, চেরাপুঞ্জির অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত যেমন দায়ী, তেমনি প্রাকৃতিক হাওর-বাঁওড়, নদ-নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়-জলাভূমির অবাধে ধ্বংস করে ফেলার দায়কেও অস্বীকার করা যায় না।
বিজ্ঞাপন
তারা বলেন, সারাদেশেই নদী দখল, জলাশয়-জলাভূমি ভরাট চলছে নির্বিচারে। একইসঙ্গে নদীগুলোর নাব্যতা সংকটের কারণে নদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতাও কমেছে মারাত্মকভাবে। দেশ ও জনগণকে রক্ষায় আমাদের হাওর-বাঁওর, নদী-খাল, জলাশয়-জলাভূমি প্রভৃতি প্রাকৃতিক জল ধারণ এলাকা সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।
বিজ্ঞাপন
তারা আরও বলেন, পরিমিত বৃষ্টি কৃষক ও পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার তীব্রতা বেড়ে গেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভূমি ব্যবহারও পরিবর্তিত হয়ে গেছে। একটি ন্যাশনাল ফিজিক্যাল প্ল্যান প্রয়োজন। যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্বে তার ইমপ্যাক্ট স্টাডি করা অপরিহার্য। জনগণকে প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন কারণ তারাই তাদের এলাকা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভালো জানে। গবেষণা-নির্ভর কাজে গুরুত্ব দিতে হবে এবং সুস্পষ্ট নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বক্তারা বলেন, ভূমির ব্যবহার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিম্নাঞ্চল ও কৃষিজমিতে বসতবাড়ি, সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো গড়ে উঠছে। সড়কগুলো বন্যার পানি সরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় অনেকেই সাময়িক আর্থিকভাবে উপকৃত হন কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে জনজীবন ও প্রকৃতির ক্ষতি সাধিত হয়। নগর এলাকা অনেক বেশি কংক্রিটে ছেয়ে গেছে। এ থেকে সরে এসে সবুজ পরিসর গড়ে তোলা প্রয়োজন।
ওয়ার্ক ফর অ্যা বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতারের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন নগর গবেষণা কেন্দ্রের সেক্রেটারি সালমা এ সাফি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম, ওয়ার্ক ফর অ্যা বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী প্রমুখ।
এএসএস/আরএইচ