গরু-ছাগল চলে এসেছে ঢাকায়, চলছে বিশ্রামের পালা
ঈদের দিনসহ মোট ৫ দিন ঢাকায় অস্থায়ী কোরবানির হাট বসতে পারবে বলে নিয়ম করা হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই ঢাকায় বসেছে হাট। এসব হাটে প্রচুর গরু-ছাগল এলেও এখন পর্যন্ত ক্রেতার তেমন একটা ভিড় দেখা যাচ্ছে না। ফলে বেচা-কেনাও এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। বিক্রেতারা বলছেন, একটু আগে আগেই তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন পশুগুলোকে একটু বিশ্রাম দেওয়ার জন্য।
আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাট ঘুরে জানা গেছে, আরও কয়েকদিন আগেই হাটে পাইকাররা গরু তুলেছেন। তাদের জন্য আগে থেকেই বাঁশ দিয়ে গরু রাখার স্থান, ত্রিপল, পাইকারদের থাকার জায়গা, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। হাটগুলোর প্রবেশদ্বারে তৈরি করা হয়েছে বিশাল বিশাল তোরণ। ট্রাক, পিকআপ থেকে গরু তোলা, নামানোর স্থান, হাসিল প্রদানের অস্থায়ী স্টেজও তৈরি। হাটকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে খাওয়ার অস্থায়ী দোকান। সব আয়োজন পরিপূর্ণ হলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি নেই। ফলে হাট বসলেও এখনও জমেনি বেচা-কেনা।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর আফতাবনগর হাটে কথা হয় পশু বিক্রেতা মমিনুল ইসলামের সঙ্গে। আলাপাকালে তিনি বলেন, হাটে প্রচুর গরুর আমদানি, তবে ক্রেতা একদমই নেই। আশা করছি আগামী দুই দিনের মধ্যে হাট জমজমাট হয়ে উঠবে। এখনও সেভাবে ক্রেতা আসতে শুরু করেনি।
• আরও পড়ুন : শিশু নাইমের গরুটি কি বিক্রি হলো
বিজ্ঞাপন
নির্ধারিত সময়ের আগে হাটে এসেছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি, গরুর একটা রেস্টের বিষয় আছে। আমরাও ভালো স্থানে যেন বসতে পারি সে কারণেই মূলত আগে আসা। সব হাটেই আমাদের মতো এমন পাইকাররা গরু আগেই এনে উপস্থিত হয়েছেন, প্রতিবারই এমনই হয়।
সাঈদ নগর (বালুর মাঠ) অস্থায়ী হাটে কথা হয় হাটটির পরিচালনা কমিটির সদস্য আলতাব হোসেনের সঙ্গে। একই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হাটে বেচা-বিক্রির জন্য সিটি করপোরেশন সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরাও সেই নিয়ম মেনেই হাট চালু করব। তবে হাট অনেক বড় পরিসরের বিষয়, সেজন্য কিছু দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। আমরা হাসিল আদায়ের জায়গা প্রস্তুত করাসহ গরু রাখার স্থান, পাইকারদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাসহ সার্বিক প্রস্তুতি আরও কিছুদিন আগে শেষ করেছি।
তিনি আরও বলেন, পাইকাররা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু নিয়ে হাটে হাজির হয়েছেন। তাদের আসারও তো একটি প্রস্তুতি দরকার আছে। তাই আগে তারা এসেছেন। তবে হাটে ক্রেতারা এখনও আসতে শুরু করেনি। দুই একদিনের মধ্যে রাজধানীর হাটগুলো জমজমাট হয়ে উঠবে।
• আরও পড়ুন : গাবতলী হাটে ছোট গরুর চাহিদা বেশি
পাবনা থেকে রাজধানীর মৈত্রী ক্লাব সংঘ মাঠের অস্থায়ী হাটে ১৩টি গরু এনেছেন রাজিব আহমেদসহ তার দলের আরও ৩ সদস্য। হাটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে কথা হয় রাজিব আহমেদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, আজ ৩ দিন হলো হাটে এসেছি। প্রতিদনই গরুর খাওয়া খরচ, রক্ষাণবেক্ষণ খরচ, আমাদের চারজন মানুষের খাওয়ার খরচ হচ্ছে। তবুও একটু আগেই হাটে এসেছি, গরুগুলোকে একটু রেস্ট দেওয়ার জন্য। এ পর্যন্ত দু’একজন ঘুরতে আসা ছাড়া, আসল ক্রেতা হাটে সেভাবে আসছে না। নির্ধারিত সময়ের আগে হাটে বিক্রেতারা সবাই উপস্থিত হলেও বেচা-বিক্রি এখনও শুরু হয়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন এর আগে বলেছিলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে যদি হাটে কেউ কেনা-বেচা শুরু করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
• আরও পড়ুন : নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় ‘কালু’, দাঁতও দেখায়
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে গত দুই বছর রাজধানীর হাটকেন্দ্রিক উৎসবের আমেজে অনেকটা ভাটা পড়েছিল। রাজধানীর সব পশুর হাটে জনসমাগম ছিল নিয়ন্ত্রিত। নির্ধারিত হাটের সংখ্যাও কমিয়ে এনেছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও হাটের সংখ্যা কমানো হয়েছে।
এএসএস/এনএফ