কৃষি সহযোগিতার বিষয়ে ফি‌জির স‌ঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করে‌ছে বাংলা‌দেশ। সোমবার (২৫ জুলাই) অ‌স্ট্রেলিয়ার ক্যান‌বেরার বাংলা‌দেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ্য জানিয়েছে।

দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের তিন দিনব্যাপী ফিজি সফরের মধ্যে কৃষি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত ক‌রা হয়। ফিজির কৃষিমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি আলাদা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। 

কৃষিমন্ত্রী ড. মাহেন্দ্র রেড্ডির সঙ্গে বৈঠকের সময় বাংলাদেশ ও ফিজির মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে আরও নিবিড় করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
 
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ বিগত এক দশকে কৃষিক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করছে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান আবিষ্কারে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছ থেকে জলবায়ু ভঙ্গুর দেশ হিসেবে ফিজি অভিজ্ঞতা নিতে পারে বলে হাইকমিশনার উল্লেখ করেন।
 
ফিজিতে অনেক আবাদযোগ্য কৃষি জমি রয়েছে এবং ফিজির আবহাওয়া কৃষির জন্য অত্যন্ত উপযোগী উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশ ও ফিজির যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয় উত্থাপন করেন। 

ফিজির কৃষিমন্ত্রী মাহেন্দ্র রেড্ডি বলেন, ফিজি কৃষিতে সাফল্য নিয়ে আসার জন্য বাণিজ্যিক কৃষির ওপর জোর দিচ্ছে। তিনি কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য তার দেশের সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। 

ফিজিকে প্যাসিফিক অঞ্চলের হাব হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত এবং নতুন নতুন গবেষণা অর্ন্তভুক্ত করা প্রয়োজন। তিনি কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বাংলাদেশের কাছ থেকে কৃষি গবেষেণার ক্ষেত্রে সহযোগিতা কামনা করেন। 

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতা জন্য একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়, যা পরে দুদেশের মধ্যে সরকারিভাবে স্বাক্ষরিত হবে। 

একই দিনে ফিজির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী ফাইয়াজ খোয়া ও বাংলাদেশের হাইকমিশনার দু’দেশের  মধ্যে বিদ্যমান ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর আলোচনা করেন। 

ফাইয়াজ খোয়া বলেন, বাংলাদেশ ও ফিজি দীর্ঘদিনের বন্ধুপ্রতীম দেশ। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিনিয়োগ সহজ করার জন্য ফিজি সরকারও বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
 
বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা ফিজি সরকারের দেওয়া সুবিধা গ্রহণ করে বিনিয়োগ করতে পারে।
 
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ নতুন নতুন পণ্য রপ্তানি করছে। তিনি তৈরি পোশাকের পাশাপাশি, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইটি ও আইটি এনাবেল্ড সার্ভিস রপ্তানিতে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ ইউরোপ, আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশের ওষুধ আমদানি করে ফিজি সুলভে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারে। 

হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে দক্ষ পেশাজীবী এবং বিনিয়োগকারীরা ফিজির উন্নয়নে অবদান রাখছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এনআই/জেডএস