বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন লুটপাট-দুর্নীতির অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে হারিকেন নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে গণসংহতি আন্দোলন।

বুধবার (২৭ জুলাই) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা মহানগরের আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে আগামী ১০ আগস্ট জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভের ঘোষণা দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটে আছে। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে একথা সরকার নিজেই বলেছে। কদিন আগেই মহাসমারোহে শতভাগ বিদ্যুতায়নের অনুষ্ঠান করা হলো। আর এখন সরকারই বলছে হারিকেন জ্বালাও, কুপি জ্বালাও। সরকারের ঘোষণার আগেই লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। সরকার বলছে সুষম লোডশেডিং আর গ্রামে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত। যারা দেশের অর্থনীতি চালান তারাই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পরছেন। ইতোমধ্যে সার কারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে।

>> এবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খরচ কমানোর নির্দেশ

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের সংকট ও বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে লুটপাটের ব্যবস্থা করে। দ্রুত সমাধানের কথা বলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হলো। ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলার কথা ছিল। এখন ২০২২ সালেও এগুলো চলছে এবং আবারও নবায়ন করা হচ্ছে। তাদেরকে বসিয়ে বসিয়ে গত ১২ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে এবং লুট করা হয়েছে। গত ১৩ বছর সরকার ক্ষমতায় আছে, কিন্তু দেশের মজুত থেকে এক ইউনিট গ্যাসও উত্তোলন করতে পারেনি। বরং লুটপাটের সুযোগ তৈরির জন্য পুরো বিদ্যুৎ খাতকে আমদানি নির্ভর করে ফেলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে সরকারের কোনো অগ্রাধিকার নেই। সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হচ্ছে ভারতের স্বার্থে। আমরা এর বিরোধিতা করে বলেছিলাম নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোযোগ দিতে হবে আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার জন্য। কিন্তু সরকার সেদিকে হাঁটেনি; বরং নগদ লুটপাটের আয়োজনের দিকে নজর তাদের।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দায় মুক্তি আইন বাতিল করে স্বাধীন জাতীয় কমিশন গঠন করে বিদ্যুৎ খাতে চুরি দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার করতে হবে। এরা তা করবে না। এজন্য এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে এই বিচার সম্পন্ন করতে হবে। বিদ্যুৎ নিয়ে লুটপাট ও দুর্নীতির প্রতিবাদে আগামী ১০ আগস্ট জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার মাধ্যমে সরকারকে হুশিয়ার করা হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ানের সভাপতিত্ব এবং উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, ঢাকা জেলা সদস্য সচিব মিজানুর রহমানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিভিন্ন থানা ইউনিটের নেতারা।

এইচআর/ওএফ