দিন দিন দুরূহ হয়ে পড়ছে ঢাকায় বসবাস
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেছেন, ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা দিন দিন আরও দুরূহ হয়ে পড়ছে। যেভাবে ঢাকা শহর গড়ে উঠছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর নগরী রেখে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটে ‘পরিকল্পিত আবাসন’ বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ভবন তদারকির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর প্রয়োজনীয় জনবল নেই উল্লেখ করে শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী রাজউক রাজধানী এলাকার ভবনের নকশা অনুমোদন দেয়। সে নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করছে কি-না সেটা তদারকি করার দায়িত্ব রাজউকের। কিন্তু এত বিশাল এলাকায় তদারকি করার মতো প্রয়োজনীয় জনবল নেই সংস্থাটির।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি আইন মানার জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। কারণ নকশা অনুমোদন নেয় একরকম, আর ভবন নির্মাণ করে অন্যরকম। যদি মানুষ সচেতন হয়, তাহলে নির্মাণকারীরা অবৈধভাবে ভবন তৈরি করতে পারবে না।
সচিব বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তর বিভিন্ন ভবন নির্মাণ করছে। সংস্থাটির পরিকল্পিত ভবন নির্মাণে পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলীসহ সব ধরনের হাতিয়ার রয়েছে। সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও ভবন নির্মাণ করছে, যাদের এ ধরনের জনবল নেই। পরিকল্পিত ও টেকসই নির্মাণ নিশ্চিত করতে সেসব প্রতিষ্ঠানকেও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আন্তঃসংস্থাগুলোর মধ্যে এ ধরনের প্রতিযোগিতা হবে।
বিজ্ঞাপন
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আলমগীর সামছুল আলামিন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মেগাপ্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তদারকি না করার কারণে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কিছুদিন পর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাতিরঝিলের মতো প্রজেক্ট তদারকির অভাবে নষ্ট হচ্ছে। পানির দুর্গন্ধের কারণে হাতিরঝিলের পাশ দিয়ে চলা দায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সরকারের উচিত বড় প্রকল্প নেওয়ার পাশাপাশি সঠিক তদারকির ব্যবস্থা করা।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, পরিকল্পিত আবাসন খুবই দরকার। কারণ নগর বড় হচ্ছে। একইসঙ্গে জনসংখ্যাও বাড়ছে। নগরের পরিধি নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর পর্যন্ত বেড়েছে। কিন্তু পরিকল্পিত নগরী গড়ে উঠেনি। ইট-পাথরের কঙ্কাল শহর গড়ে উঠেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী ইশতেহারে আমার গ্রাম; আমার শহর বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। ইতোমধ্যে কাজ চলছে। সেখানে পরিকল্পিতভাবে শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুন প্রমুখ।
এএসএস/এসএসএইচ