৯৯৯ নম্বরে ফোন, উদ্ধার হলেন ১১ নাবিক
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা এম ভি বোরহান সরদার-১ নামে একটি লাইটার জাহাজ মেঘনা নদীর লক্ষীপুরের রামগতি থানাধীন গজারিয়া চরে যখন পৌঁছায়, তখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে। নদীতে কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় জাহাজের ১১ নাবিক সিদ্ধান্ত নেন রাতটি তারা এখানে কাটাবেন।
জাহাজ নোঙর করে যখন রাত কাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নাবিকরা, তখনই সেতু-৬ নামে আরেকটি জাহাজ দিকভ্রান্ত হয়ে এমভি বোরহান সরদার-১ জাহাজটিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এতে জাহাজের তলা ফেটে পানি উঠতে থাকে। ঘণ্টাখানেক বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করলেও নাবিকদের কেউই উদ্ধার করতে আসেনি। উদ্ধারের আশায় শেষ চেষ্টায় তাদের মধ্যে একজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করেন। ফোন পেয়ে নৌ-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১১ নাবিককে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় জরুরি সেবার পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানান।
আনোয়ার সাত্তার বলেন, বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নাবিকদের মধ্যে মো. সোহেল নামে একজন যখন আমাদের ফোন দেয় তখন তাখির পরিবর্তন হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি। সে আমাদের জানায়, জাহাজে পানি উঠে একপাশ কাত হয়ে গেছে, যেকোনো সময় পুরো জাহাজ ডুবে যেতে পারে। তাদের উদ্ধার করার জন্য সাহায্য চাওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ৯৯৯ যখন মো. সোহেলের ফোন কলটি রিসিভ করে রাত তখন ১টা বাজতে এক মিনিট বাকি। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে নৌপুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বিষয়টি জানায়। নৌপুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বিষয়টি লক্ষীপুরের বড়খেরী নৌপুলিশ ফাঁড়িকে জানানো হয়। ঘটনাস্থল বড়খেরী নৌপুলিশ ফাঁড়ি থেকে নৌপথে ১২/১৩ কিমি. দূরত্বে অবস্থিত।
বড়খেরী নৌপুলিশ ফাঁড়ির একটি দল উদ্ধারকারী নৌযানে করে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দেয় রাত দুইটার দিকে। কিন্তু কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কম থাকায় তাদের যথেষ্ট সাবধানে এবং ধীরে অগ্রসর হতে হয়েছে। অবশেষে ভোর পাঁচটার একটু পর কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘনা নদী থেকে একটি মাছ ধরা ট্রলারের সহযোগিতায় নদীতে লাইফ জ্যাকেট পরে ভাসমান অবস্থায় ১১ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে।
এমএসি/জেডএস