রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত ১৮ তলা কনকর্ড ভবনটি স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বুধবার (৩১ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের উপস্থতিতে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়।

ভবনটি হস্তান্তরের সময় ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এই জায়গাটি দেওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এটি এতিমদের স্বার্থে ব্যবহৃত হবে। যে কারণে আজ আমরা এতিমখানার প্রশাসকের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করলাম।

স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, রায়ের পর আমরা ৩০ দিন অপেক্ষা করেছি। এরপরও কনকর্ড ভবনটি আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম। আজ জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ভবনটি আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হলো।

এর আগে রায় বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত সময় ৩০ দিনের মধ্যে কনকর্ডকে এতিমখানা ভবনটি বুঝিয়ে দিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর এতিমখানার পক্ষে আবেদন করা হয়। গত ৪ আগস্ট এ আবেদন করা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহীদুল ইসলাম সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার পক্ষে বর্তমান প্রশাসক ও সমাজসেবার অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ভবনটি হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরের সময় জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), এতিমখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৯ জুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ কনকর্ড গ্রুপের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। আদেশে আদালত বলেন, আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

এতিমখানা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও তৎকালীন সরকারের নারী এমপি বেগম সামছুন্নাহার, সামছুন্নাহারের ছেলে ও কমিটির সহ-সভাপতি সানী এবং সাবেক সেক্রেটারি জিএ খানসহ কমিটির সব সদস্য মিলে ২০০৪ সালে এতিমখানার ৮.৫ বিঘা সম্পত্তি কনকর্ড কনডোমিনিয়াম লিমিটেডের (ডেভেলপার) সঙ্গে যৌথ উন্নয়নের নামে অসম, জালিয়াতি ও বেআইনি চুক্তি করেন। ওই জমির মধ্যে ২ বিঘা (৪০) কাঠা জমির ওপর ডেভেলপার কোম্পানি ২০১২ সালে একটি ১৮ তলা আবাসিক-বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে, যার অনুপাতে এতিমখানা পাবে ১২ শতাংশ, ডেভেলপার ৮৮ শতাংশ এবং সাইনিং মানি বাবদ এতিমখানাকে দেওয়া হয় ৩০ লাখ টাকা। 

কমিটির সদস্যরা যোগসাজশের মাধ্যমে, আজীবন সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ও লিজের শর্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, এতিমখানার গঠনতন্ত্রের বিধি ভঙ্গ করে, এতিমদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে, নিজেদের লাভের উদ্দেশ্যে এতিমখানার জমি বিক্রি করেছেন। এসব কর্মকাণ্ডে দায়ভার ২০০৩ সালের কার্যনির্বাহী কমিটি ওপর বর্তায় কারণ কার্যনির্বাহী কমিটিকে এতিমখানার গঠনতন্ত্র লিজ করা সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করার কোনো ক্ষমতা দেয়নি। কার্যনিবাহী কমিটি ও ডেভেলপার কোম্পানির প্রতারণার জালে এতিমদের ঠকিয়ে উভয়ই লাভবান হয়েছে।  

এএসএস/জেডএস