ওসি মনিরুলের অবৈধ সম্পদ : দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ
বিভিন্ন অনিয়ম ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বিষয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ১৭ আগস্ট অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক নিয়ামুল আহসান গাজীকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অনুমোদন ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে দুদক।
দুদকের আদেশ সূত্রে জানা যায়, ওসি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করবেন কমিশনের বিশেষ তদন্ত শাখার মহাপরিচালক।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন রমনা মডেল থানার ওসির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির একটি অভিযোগ হাইকোর্টে পেশ করলে হাইকোর্ট অভিযোগটি দুদকে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন। হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যরিস্টার সুমন গত ১১ আগস্ট ওসির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ কমিশনে জমা দেন। তারই আলোকে কমিশন ওই ওসির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৪ আগস্ট ‘ঢাকায় ওসির আটতলা বাড়িসহ বিপুল সম্পদ’ শিরোনামে এক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রথমাংশে বলা হয়, ঢাকায় আটতলা বাড়ি করেছেন। বানাচ্ছেন আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে তার রয়েছে চারটি প্লট। বাড়ি, প্লটসহ এই বিপুল সম্পদের মালিক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম। রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটিতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরকারি একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে পত্রিকাটির অনুসন্ধানে ওসি মনিরুলের এসব অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সূত্র বলছে, যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তার সম্পদের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি।
পুলিশের একজন পরিদর্শক হয়ে ওসি মনিরুল কীভাবে এত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনা চলছে। বর্তমানে তিনি নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা স্কেলে সাকল্যে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পান। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এই সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন।
জানা যায়, ১৯৯২ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন মনিরুল ইসলাম, যখন এই পদটি তৃতীয় শ্রেণির ছিল। ২০১২ সালে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক হন। প্রায় ৩০ বছরের চাকরিজীবনে বেশির ভাগ সময় ঢাকা রেঞ্জে ছিলেন। তার বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায়।
আরএম/জেডএস