বঙ্গপোসাগরে জাহাজ ডুবির ঘটনায় ভারতে আটকে পড়া ১৬ জেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ উপকূলীয় মৎস্য ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন।

মানববন্ধন শেষে পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আটকে পড়া জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করে সংগঠনটি। 

সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, বিভিন্ন সময় সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ভারতীয় সমুদ্রসীমায় প্রবেশের কারণে সে দেশের কোস্টগার্ড ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটকা পড়ে কারাগারে রয়েছেন প্রায় ২ শতাধিক বাংলাদেশি জেলে। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তাদের পরিবার দেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা অবিলম্বে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন, ভুলবশত ভারতের সীমানায় গেলে কোস্টগার্ড শ্রমিকদের আটক করে জেলে দেয়। তাদের ছাড়িয়ে আনতে পরিবারের সদস্যদের মাসের পর মাস ভারতে যেতে হয়, এতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু ভারতের কোনো জেলে বাংলাদেশে আটক হলে ভারতের হাই কমিশনার তাদের জেলেদের অল্প সময়ের মধ্যে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

মানববন্ধনে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৪ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো 

১. ভারতে আটকে পড়া শ্রমিকদের অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে হবে। ডুবে যাওয়া ট্রলারের মারা যাওয়া মাঝি ও শ্রমিকদের প্রতি পরিবারকে প্রাথমিক ১০ লাখ টাকা এবং প্রতি ট্রলারের ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। 

২. প্রতি ট্রলারের মাঝি, শ্রমিক ও জেলেদের নামে ২০ লাখ টাকা গ্রুপ বীমা করে দিতে হবে। 

৩. প্রতিটি ট্রলারের সন্ধানে সীমান্তরক্ষী নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডের আওতায় থাকার জন্য প্রতিটি ট্রলারের ওয়াকিটকি দিতে হবে। সরকার প্রতি বোটে জীবনরক্ষাকারী আধুনিক বয়া দিতে হবে এবং দিক নির্ণয় করার জন্য সাগরের কিনারে রাডার বাতি স্থাপন করতে হবে।

৪. ট্রলার শ্রমিক ও জেলেদের জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত মালামাল বণ্টনের নামে লুটপাট বন্ধের লক্ষ্যে ট্রলার শ্রমিক প্রতিনিধি, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও শ্রম দপ্তরের প্রতিনিধির সমন্বয় কমিটি গঠন করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইসরাঈল পন্ডিত, আবুল খায়ের, মো. শাহজাহান, মো. বাবুল মীর, আনন্দ চন্দ্র বর্মন, নান্নু মিয়া, শামসুল হক, খোকন মিয়া, আশরাফ আলী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ‘এফবি সামিরা’ নামক একটি বোট ডুবে যায়। এতে ১ জন জেলে মারা যায় এবং ওই বোটের ১১ জন ও অন্য বোটের ৫ জনসহ মোট ১৬ জন বাংলাদেশি জেলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

আইবি/এমএ