চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে ধর্ষণ
সঞ্জিব কুমার দাস
ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক গার্মেন্টস কর্মীকে বাসায় ডেকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার (২ মার্চ) সবুজবাগ থানায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ২।
এদিকে প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে ধর্ষণে সহযোগিতা করায় আনিকা নামে এক নারীসহ মূল অভিযুক্ত সঞ্জিব কুমারকে গ্রেপ্তার করেছে সবুজবাগ থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার মূলহোতা সঞ্জিব কুমার দাস (৩৭) নিজেকে মাদারীপুর জেলা বিআইডব্লিওটিএ’র চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী বলে দাবি করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি ঝালকাঠিতে। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের এক বাসায় ভাবির সঙ্গে বসবাস করেন এবং স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। ৫ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর থেকেই ভাবির সঙ্গে থাকেন। পাশাপাশি অন্যত্র ভাল কাজের সন্ধান করছিলেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পরিচিত সঞ্জিব দাসের (৩৭) সঙ্গে দেখা হয় ভুক্তভোগী নারীর। কুশল বিনিময়, কথাবার্তার এক পর্যায়ে সঞ্জিব ওই নারীকে ব্যাংকে ভালো একটা চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। পাঁচদিন পর ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে সঞ্জিব তাকে ফোন করে জানান যে ব্যাংকে ভালো চাকরির সন্ধান আছে। এখনই তাকে মাদারটেক টেম্পো স্ট্যান্ডে আসতে হবে। সন্ধ্যা ৬টায় মাদারটেক টেম্পো স্ট্যান্ডে যান ওই নারী।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত সঞ্জিব দাস সন্ধ্যা ৬টায় তাকে দক্ষিণ মাদারটেকের ১২৫/গ বাসার ৬ষ্ঠ তলায় নিয়ে যায় এবং ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি কক্ষে বসিয়ে রেখে সে বাহিরে যায়। ওইসময় পাশের রুমে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলাও ছিলেন। ওই মহিলাও নাকি ব্যাংকে চাকরি করেন।
পরে রাত ৯টার দিকে তিনজন লোকসহ সঞ্জিব বাসায় ফেরে এবং তাদের ব্যাংকের লোক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। তাদের নাম, আজিজুর রহমান (৪১), জামাল (৩৫), মো. রাসেল/বিপ্লব (৪৫)। তারা চাকরির বিষয়ে তথ্য জানতে চান ও নানান প্রশ্ন করেন।
কথা বলার একপর্যায়ে আজিজুরকে রেখে সঞ্জিব, জামাল ও রাসেল পাশের রুমে চলে যায়। রাত ১০টার দিকে আজিজুর ওই নারীকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এরপর আসামি সঞ্জিব, জামাল ও রাসেলও পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। আর আনিকা নামে ওই মহিলা এসব কাজে সহায়তা করে।
পরে মেরে ফেলা ও বিবস্ত্র করে মোবাইলে নগ্ন ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সঞ্জিব নিজেই ওই নারীকে মাদারটেক টেম্পো স্ট্যান্ডে পৌঁছে দেয়। কেরানীগঞ্জে ফিরে ঘটনার বিস্তারিত ভুক্তভোগীর ভাবিকে জানালে পরদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনা শুনে তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে। পরে আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে ওই নারী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মো. আজিজুর রহমান (৪১), মো. জামাল (৩৫), মো. রাসেল বিপ্লব (৪০)।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী ও সবুজবাগ থানার ইন্সপেক্টর(অপারেশন) মো. আসগর আলী জানান, আমরা প্রাথমিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত সঞ্জিব ও আনিকা নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। সঞ্জিব নিজেকে বিআইডব্লিওটিএ-এর কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। সেটা যাচাই-বাছাই করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
জেইউ/এমএইচএস