বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতিতেই বাংলাদেশ পরিচালিত হবে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে বিদেশি রাষ্ট্র ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই নীতিতেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ পরিচালিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার (০১ মার্চ) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের যৌথ উদ্যোগে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আদর্শগতভাবে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত অবিচল, কিন্তু একইসঙ্গে দেশের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বাস্তববাদী। আর এজন্য তিনি সর্বজনীন মূল্যবোধ ও নীতির ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ নীতি ও আদর্শই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি এবং এ আদর্শ অনুযায়ীই ভবিষ্যতে পরিচালিত হবে বাংলাদেশ।’
ওয়েবিনারটির প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক ও লেখক সলীল ত্রিপাঠি, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার অনার প্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনিয়র কূটনীতিক থমাস এ ডাইন এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
বিজ্ঞাপন
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। প্যানেল আলোচনা পর্বের সঞ্চালক ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ইনস্টিটিউট ফর সাউথ এশিয়া স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. সঞ্চিতা বি. সাক্সেনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি গতিশীল পররাষ্ট্রনীতি হিসেবে চিহ্নিত। বিশ্বে যার রয়েছে নিরপেক্ষতার খ্যাতি এবং উচ্চ নৈতিক অবস্থান। আর এ কারণেই অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের প্রায় সব দেশের স্বীকৃতি অর্জন করতে পেরেছিল বাংলাদেশ।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিভঙ্গি ও আদর্শ যা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তার প্রথম বাংলায় ভাষণে প্রতিভাত হয়েছিল, তা অনুসরণ করেই বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ককে অব্যাহত রাখা হয়েছে। সে সময়ের বৈশ্বিক অর্থনীতির অসমতা দূর করতে বঙ্গবন্ধু মানুষের ভ্রাতৃত্ব ও একাত্মতার শক্তির জাগরণের আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।’
‘বিশেষ করে কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে আজ যখন বিশ্ব উন্নয়ন ব্যবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর, ঠিক এ সময়েই জাতির পিতার সেই আহ্বানের বাস্তবায়ন প্রয়োজন’, বক্তব্যে যোগ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
লেখক ও সাংবাদিক সলীল ত্রিপাঠি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন অন্তর্ভূক্তিমূলক জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। যার শেকড় নিহিত ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে। জাতির পিতার এই ধারণা আজকের পৃথিবীতে বড়ই প্রাসঙ্গিক।’
কূটনীতিক থমাস এ ডাইন একাত্তরের মুত্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন প্রশাসনের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে আলোকপাত করেন। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে উন্নয়ন ও অগ্রগতির উজ্জ্বল উদাহরণ সৃষ্টি করে সে সময়ের মার্কিন নেতৃত্বকে ভুল প্রমাণ করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু কীভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছিলেন তা বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে উল্লেখ করেন প্রফেসর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
এনআই/জেডএস