বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে অবিলম্বে ফেরত আনতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহিঃসমর্পণ চুক্তি করতে চায় ঢাকা।

ওয়াশিংটনে স্টেট ডিপার্টমেন্টে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ওয়েন্ডি শেরম্যানের সঙ্গে এক বৈঠকে বহিঃসমর্পণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর জন্য মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বহিঃসমর্পণ চুক্তি সম্পাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

খুনি রাশেদ চৌধুরী ব্রাজিল থেকে ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০০৪ সালে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পান তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে। কিন্তু ফাঁসির আসামি বলে তাকে ফেরত দিতে অনীহা দেখায় যুক্তরাষ্ট্র।

রাশেদকে ফেরত দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালে দুই বার এবং ২০২০ সালে আরও একবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে একাধিক বৈঠকে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর দাবি তুলেছিলেন। ২০১৯ সালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে এক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে রাশেদ চৌধুরীর বিচারের নথিপত্র চেয়েছে ওয়াশিংটন।

ঢাকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে গত বছরের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয় দেশটির বিচার বিভাগ। এর মধ্যেই দেশটির ক্ষমতার পালাবদল হয়ে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হন। বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরও দেশটি থেকে রাশেদকে ফেরানোর বিষয়টি ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরে ঢাকা।

সবশেষ, চলতির বছরের এপ্রিলের শুরুতে ঢাকা-ওয়াশিংটন কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মোমেন। সেখানেও রাশেদকে ফেরানোর বিষয়টি তোলা হয়। তখন মোমেন ব্লিঙ্কেনকে বলেছিলেন, খুনি রাশেদকে ফেরত দিলে ঢাকা-ওয়াশিংটনের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক একটি গেম চেঞ্জার হবে।

এনআই/এসএম