আমাদের কন্যাশিশুরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুত। এখনই কন্যাশিশুর জন্য কাজ করার এবং দায়িত্ব নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর উপযুক্ত সময়। সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে, তাদের সম্ভাবনা, সামর্থ্য ও নেতৃত্বে বিশ্বাস রেখে বিনিয়োগ করা দরকার।

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর)  আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মেয়েদের পিছিয়ে রাখে এমন পদ্ধতিগত এবং অন্তর্নিহিত বাধাগুলোকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করার জন্য অনুষ্ঠানে সম্মিলিতভাবে সকলকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা। কোভিড—১৯ এর কারণে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে শুধুমাত্র তা দূর করতেই নয়, মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য মহামারি পরবর্তী লিঙ্গবৈষম্য বন্ধ করতেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস—এর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। যার প্রতিপাদ্য ছিল— এখনই সময় ভবিষ্যৎ গড়ার, নিশ্চিত করো নিজের অধিকার।

সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যসূচির পরিবর্তন করা হচ্ছে, ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কোডিং অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে রোধে শুধু মেয়েদের নয়, ছেলেদেরও সচেতন করতে হবে। ইভটিজিং প্রতিরোধের উপায় কোনোভাবেই মেয়েদের ঘরে আটকে রাখা নয়, ইভটিজিং প্রতিরোধের উপায় অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য পরিপূর্ণ বিকাশের সুযোগ তৈরি করার জন্য সরকার নতুন কারিকুলাম পাইলটিং শুরু করতে যাাচ্ছে। যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের পাশাপাশি মানবিক ও সৃজনশীলতাকেও যুক্ত করা হবে। যা শিশু-কিশোরদের বিজ্ঞানমনস্ক করার পাশাপাশি মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও দক্ষ প্রজন্ম তৈরিতে সহায়তা করবে।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নারীদের এসএসসি ও এইচএসসির পর শিক্ষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ করে দেন যা নারীদের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কন্যা শিশুদের এগিয়ে নিতে ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একজন বাবা হিসেবে, একজন ভাই হিসেবে, একজন সন্তান হিসেবে যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করি তাহলেই আমাদের কন্যা শিশুদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, আইসিটি বিভাগ বিবাহ ও ডির্ভোস রেজিস্ট্রেশনের জন্য সফটওয়ার তৈরি করেছে। আইন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অনুমোদন পেলেই সেটা চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড এবং অস্ট্রেলিয়ান রাষ্ট্রদূত জেরেমি ব্রুর। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন ইউনিসেফের বাংলাদেশি অফিসার ইনচার্জ ডক্টর আবদুল্লাহ। সেশনটি সঞ্চালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।

এএজে/এনএফ