জন্ম নিবন্ধন ভোগান্তি বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, প্রতিটি জায়গায় জন্ম নিবন্ধন বিষয়ে নাগরিকরা যে কতটা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন তা বলার মতো নয়। এই জন্ম নিবন্ধনে প্রতিটি ধাপে ধাপে সব জায়গায় মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এর একটা সমাধানে আসা উচিত।

রোববার (১৬ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের লোকজন যখন জন্ম নিবন্ধনের কাজ করে তখন বারবার একটা সমস্যার সম্মুখীন হয় সেটা হচ্ছে সার্ভার সমস্যা। হয় সার্ভার থাকে না, নয়তো সমস্যা থাকে। সার্ভার সমস্যা যখন সৃষ্টি হয় তখন কাজগুলো বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের পক্ষ সংশ্লিষ্টদের হেল্প লাইন নম্বরে ফোন দেওয়া হয়, জন্ম নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কেউ তখন ফোন ধরে না। তাহলে এ বিষয়টা সমাধান কীভাবে হবে, কাউকে তো এটার রেসপন্সিবিলিটি নিতে হবে। দিনভর সার্ভার বন্ধ থাকার কারণে আমরা আর দিনের বেলা সার্ভিসটা দিতে পারি না। রাত যখন হয় তখন আবার দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে।

তিনি আরও বলেন, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সার্ভারের পর্যাপ্ত ক্ষমতা নেই। স্কুল-কলেজে ভর্তি হওয়ার যখন সময় আসে তখন লাখ লাখ মানুষ তাদের সন্তানদের জন্ম নিবন্ধনের জন্য আমাদের কাছে আসে। কিন্তু আমরা সেই সার্ভিসটা দিতে পারি না। এর কারণ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সার্ভারের দুর্বলতা, তাদের কারণে কিন্তু গালি শুনতে হয় আমাদের। মানুষ যখন তার সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করতে আসে তখন তার কোনো কারণে ভুল হতেই পারে, কিন্তু যদি কোনো কারণে ভুল হয়ে যায় তাহলে সেই ভুল সংশোধনের জন্য সেই নাগরিককে যেতে হয় ডিসি অফিসের কার্যালয়ে, এটা আরেক ভোগান্তি। 

মেয়রবলেন, এত ভোগান্তি হচ্ছে তাহলে কেন আমরা এর সমাধান করতে পারছি না। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ে কেন এটা নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এখন সময় এসেছে সর্ব গুরুত্ব দিয়ে এই জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করতে হবে। এজন্য যা যা প্রয়োজন সব পদক্ষেপ সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে। আর তা না হলে প্রতিটি পদে পদে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সহজীকরণের উপায়ের কথা উল্লেখ করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমে একজনকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এরপরে তার কাগজপত্র যাচাই করে দিবে জন্ম নিবন্ধক, সিটি করপোরেশন। সেই কাগজপত্রে কি কি সমস্যা আছে তা সমাধান করে দেবে এই নিবন্ধন। এরপর সব ঠিক থাকলে এপ্রুভাল দেবে নিবন্ধক। যদি অনলাইনে থাকে তাহলে ই-নথির মাধ্যমে এটা স্বাক্ষরিত হবে। পরবর্তী সময়ে যেন এটা অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা যায়। এছাড়া কিউআর কোড সম্বলিত একটি কপি ও সরবরাহ করা যেতে পারে। এমন সব পদ্ধতি অবলম্বন করলে জন্ম নিবন্ধন ক্ষেত্রে নাগরিকদের যে ভোগান্তি তা দূর হবে বলে আমার মনে হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলম, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্থার) সামসুল আরেফিন, ইউনিসেফ বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ ড. সাজা ফারুক আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

এএসএস/এসএম