তামাকজাত দ্রব্য বিক্রিতে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। 

সোমবার (৩১ অ‌ক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লা‌বে 'তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান অন্তরায় কোম্পা‌নির হস্ত‌ক্ষেপ' শীর্ষক মত‌বি‌নিময় সভা থে‌কে এ দা‌বি জানা‌নো হয়।

লি‌খিত বক্তব্যে সংগঠ‌ন‌টির পক্ষ থে‌কে বলা হয়, বাংলাদেশের সর্বত্র ভ্রাম্যমাণ তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ বিক্রেতারই কোনো ধরনের ট্রেড লাইসেন্স নেই। এই বিক্রেতাদের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে এবং যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ হবে। 

এছাড়া বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন বন্ধের পাশপাশি অপ্রাপ্তবয়স্ক বিক্রেতার সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।

সভায় বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকার ৮.১-এ বলা হয়েছে- তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী ও বিক্রেতা উভয়কেই বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের আওতায় আসতে হবে। এছাড়া প্রতি বছর নির্দিষ্ট ফি দেওয়া সাপেক্ষে আবেদনের মাধ্যমে উক্ত লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। লাইসেন্সিং ব্যবস্থা কার্যকর করার অর্থ শুধু বৈধতা দেওয়া নয়, তামাক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব বাতিল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে বলা হয়, এর মধ্যে অন্যতম হলো- ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা কর্মহীন হয়ে অর্থ সংকটে ভুগবে, সরকার বড় অংকের রাজস্ব হারাবে; কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম যেমন- পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল নির্মাণের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক মানুষ সাময়িক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তারা তাদের পেশা পরিবর্তন করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হয়েছে।
 
সুতরাং তামাক কোম্পানি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে প্রচারিত এসব তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

লি‌খিত বক্ত‌ব্যে আরও বলা হয়, একক সিগারেট ব্যবসা খুব কম ব্যক্তিরই আছে। লাইসেন্সিংয়ের বিধান বাধ্যতামূলক করায় যে তামাক কোম্পানির এত গাত্রদাহ তারাই তো এসব ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স ফি দিয়ে দিতে পারে। 

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে বলা হয়, ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের জন্য তামাকজাত দ্রব্য ছাড়াও সবজি, মাছসহ আরও অনেক স্বাস্থ্যকর পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে এবং সার্বিক মনিটরিং ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সর্বোপরি তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার প্রত্যাহার করা সম্ভব হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।

অনুষ্ঠা‌নে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, কান্ট্রি ম্যানেজার মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

এনআই/জেডএস