জেল হত্যা দিবস রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালনের দাবি সোহেল তাজের
জেল হত্যা দিবসকে (৩ নভেম্বর) জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় সংসদের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউতে এক পদযাত্রা শুরু আগে তিনি এসব দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
সোহেল তাজের অন্য ২টি দাবি হলো- যেহেতু ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়, বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র (প্রজাতন্ত্র) হিসেবে জন্ম লাভ করে, তাই দিনটিকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে এবং জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, অমর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সোহেল তাজ বলেন, আপনারা জানেন আমি একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা তাজউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যখন পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে কারারুদ্ধ করে রেখেছিলেন। আমি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম পরে দেশের ফিরে আসি এবং রাজনীতিতে ঢুকি।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমি সবসময় মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে, জাতি মহান হতে পারে ও এগিয়ে যেতে পারে যদি নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারি। কারণ আমাদের ইতিহাস গৌরবের, অর্জনের ইতিহাস। আমাদের ইতিহাস হচ্ছে যোদ্ধাদের ইতিহাস। এখান থেকে আমরা আমাদের নতুন প্রাণশক্তি অর্জন করতে পারি। নতুন প্রজন্ম এখান থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে। যাতে করে একটি যোগ্য প্রজন্ম আমরা গড়তে পারি। যাদের আমরা সুনাগরিক বলতে পারি।
সোহেল তাজ বলেন, আমাদের ইতিহাসগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরতে না পারলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমি বিশ্বাস করি, সেই গৌরবের ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার ২৩ বছরের সংগ্রাম। এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের অর্জন। সেই ক্রান্তিলগ্নে যদি মুজিবনগর সরকার বা বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত না হতো তবে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতো। সেই সময় জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান এবং এম মনসুর আলী যদি বলিষ্ঠ নেতৃত্ব না দিতেন তাহলে আমাদের স্বাধীনতা নয় মাসে অর্জন করা সম্ভব হতো। তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে ছিনিয়ে বাংলার মাটিতে ফেরত আনতে পেরেছে।
তিনি বলেন, আমাদের এই ৩ দাবি এখন সময়েরই দাবি নয়, এটি এখন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার দাবি। এটা এখন গণমানুষের দাবি। এই তিন দাবি বাস্তবায়ন এখন জনস্বার্থে পরিণত হয়েছে।
সমাবেশ শেষে পদযাত্রা করে ৩ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর কাছে জমা দিতে যান। পদযাত্রা থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘সোহেল তাজের ৩ দফা, মেনে নাও মানতে হবে’।
এমএইচএন/এমএ