সরবরাহ বন্ধ হলে এমনিতেই মাদক কারবার বন্ধ হবে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, দুনিয়াব্যাপী মাদক নির্মূল করা একটি চ্যালেঞ্জ। মাদকের মতো ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা দরকার।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘কমিশনারস মিট দ্য প্রেস’-এ এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে আমরা মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। মাদকের ব্যাপারে আমরা দুই ধরনের কাজ করছি। জনগণের মধ্যে যারা মাদকসেবী ও মাদক কারবারি তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আমরা তাদের মধ্যে ডোপ টোস্ট করছি। মাদক না পেলেও ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রসিকিউশন দিচ্ছি।
তিনি বলেন, মাদকসেবনে চাকরি হারাচ্ছে পুলিশ সদস্যরাও। জিরো টলারেন্স নীতির কারণে আমরা পুলিশের মধ্যেও ডোপ টেস্ট করছি। যারা পজিটিভ হচ্ছেন তাদের আমরা চাকরিচ্যুত করছি।
বিজ্ঞাপন
মাদক বন্ধে শুধু সাপ্লাই লাইন বন্ধ করলেই হবে না, ডিমান্ড লাইন বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে ডিএমপির নবনিযুক্ত কমিশনার বলেন, যদি মাদকের ডিমান্ড ও মাদকসেবী থাকে তাহলে যতো কড়াকড়িই আরোপ করেন না কেন সাপ্লাই আসবেই। সুতরাং আমাদের আগে মাদকের ডিমান্ড বন্ধ করতে হবে। যারা মাদকসেবী তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডিমান্ড কমলে মাদক করবারিরা এমনিতেই তা ছেড়ে দেবে। আমাদের মাদকসেবীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সেবার মান ও চিকিৎসা কেন্দ্র বাড়াতে হবে।
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নাজুক, এই পরিস্থিতিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কী ধরনের পরিকল্পনা থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সাধারণ সূত্র চারটি। সেগুলো হলো- এনফোর্সমেন্ট, এডুকেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং ও এনভায়রনমেন্ট। কিন্তু একটা ক্ষেত্রে বড় সমস্যা দেখা দেয়। সেটা হলো ইঞ্জিনিয়ারিং। ঢাকা গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় স্বল্প ও মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। আমরা চেষ্টা করবো, পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা। রাজধানীবাসীকে ট্রাফিকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।
আরও কিছুদিন যানজট যন্ত্রণা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজধানীতে বেশকটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এমআরটি, বিআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের কারণে গাজীপুর থেকে শুরু করে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত যান চলাচলে সমস্যা তৈরি হয়। যার প্রভাব পড়ে রাজধানীতেও। যে কারণে ট্রাফিকে চাপ রয়েছে। যা আরও কিছু দিন থাকবে।
রাজধানীতে অবৈধভাবে পার্কিং, অবৈধ ইন্টার ডিস্ট্রিক বাস টার্মিনাল গড়ে তোলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য যদি অবৈধ পার্কিং ও বাস টার্মিনাল গড়ে তুলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। পুরো ঢাকা নো পার্কিং। প্রাইভেটকারসহ ছোট যানবাহন রাখা নিয়েই মূলত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অফিসিয়ালি পার্কিং জোন করতে আমরা চেষ্টা করছি। যদি করে দিতে পারি তাহলে ছোট যানবাহন রাখার সুবিধা হবে।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসছে না। আপনি যে পরিকল্পনা নেবেন সেটা কতোটা স্থায়িত্ব হবে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না আলাদা লেন করা। রাজধানীতে যেসব লেন করা হয়েছে তা স্থায়ী না। আমাদের ট্রাফিক সার্জেন্টদের জন্য আলাদা বক্স নেই, টয়লেট নেই। আমরা যদি কিছু করি তাহলে সেগুলো অবৈধ দখল বলে ভেঙে দেওয়া হয়। আমরা যা করি তা সাময়িক। এসব সিটি কর্পোরেশনের কাজ।
জেইউ/জেডএস