পাবলিক পরীক্ষায় ধর্ম শিক্ষা আগের মতো বহাল ও শিক্ষার সব স্তরে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও ডারউইনের বিবর্তনতত্ত্ব বাতিলসহ ১০টি দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। এসব দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণমিছিল ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। 

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণমিছিল নিয়ে রওনা হন দলটির নেতাকর্মীরা। পরে মিছিলটি গুলিস্থান শহীদ নুর হোসেন চত্বরে (জিরো পয়েন্ট) গেলে আটকে দেয় পুলিশ। তবে কোনো সংঘর্ষ কিংবা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

পরে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোছাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রদান করেন।

আরও পড়ুন : ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধি গণবিরোধী সিদ্ধান্ত : ইসলামী আন্দোলন

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন—ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান প্রমুখ।
 
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইসলামবিরোধী শিক্ষা সংযোজন করে ইসলামী শিক্ষা বিনাশ করার চক্রান্তে অনেকে মেতে উঠেছে।  

তারা বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রমের প্রাইমারি থেকে সর্বোচ্চ মাস্টার্স পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখার স্বার্থে দাখিল পর্যায়ে ৫০০ নম্বরের আরবি শিক্ষা আগের মতো বহাল করবে হবে। ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যবইয়ের নাম ‘মূল্যবোধ ও নৈতিকতা’ কিংবা অন্য কিছু নয় বরং ‘ইসলাম শিক্ষা’ রাখতে হবে। অন্যান্য ধর্ম শিক্ষা বইয়ের ক্ষেত্রেও স্ব-স্ব ধর্মের নামে থাকতে হবে। 

ইসলামী আন্দোলনের দাবিগুলো হলো—

১. শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে অভিজ্ঞ দ্বীনদার আলেমদের সম্পৃক্ত করা।
২. শিক্ষার সব স্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সব পরীক্ষায় আবশ্যিক করা।
৩. ডারউইনের অপ্রমাণিত, ভ্রান্ত ও বিতর্কিত বিবর্তনবাদ শিক্ষার সব স্তর থেকে বাদ দেওয়া।
৪. পাঠ্য-পুস্তকের সব বিষয় থেকে অনৈসলামিক ও ইসলামী বিশ্বাস বিরোধী বিষয় ও শব্দগুলো বাদ দেওয়া।
৫. ইসলাম ধর্ম শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে কুরআনুল কারীম শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা। 
৬. মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলাম, শিক্ষা নীতিমালা-২০১০ অনুযায়ী মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট আলেম ও দ্বীনদার শিক্ষকদের মাধ্যমে পুনঃ মার্জন করা। 
৭. নৈতিকতা সমৃদ্ধ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে সকল ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
৮. বাংলা, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাস বই থেকে বিতর্কিত ও ইসলামী আকিদা বিরোধী প্রবন্ধগুলো বাদ দেওয়া। 
৯. স্কুল ও মাদ্রাসার সকল পাঠ্যপুস্তক অপ্রয়োজনীয় ও অশ্লীল চিত্রমুক্ত রাখা।
১০. যেহেতু এদেশের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যয়ভারের সিংহভাগ সাধারণ জনগণই বহন করেন, সেহেতু জোর করে চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষাব্যবস্থা নয় বরং দেশবাসীর ধর্মীয় চেতনার অনুকূল শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।

এমএম/কেএ