চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খুনের মামলার আসামি এক হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। সোমবার (৮ মার্চ) কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক ছগির মিয়ার নেতৃত্বে কারাগার পরিদর্শন করেন সদস্যরা।

এর আগে ডিআইজি প্রিজন চট্টগ্রামের কার্যালয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। এ সময় কমিটির অন্য দুই সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার ফোরকান ওয়াহিদ উপস্থিত ছিলেন। 

তদন্ত দলের প্রধান ছগির মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আজ থেকে তদন্ত দলের কাজ শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত কাজ চলছে। কবে, কোথায়, কখন নিখোঁজ হয়েছেন এসব বিষয় খোঁজে দেখব।

তিনি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে কারাগারের ভেতর খোঁজ চলছে। তবে, আমাদের তদন্ত টিম এর সাথে একমত পোষণ করছে না। এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণার জন্য আমরা রাষ্ট্রীয় সব বিষয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। মূল বিষয়টা কি সেটা রাষ্ট্রের কাছে জানাতে চাই।  

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কারাগারের ভেতরে নিখোঁজ বন্দীর সন্ধান করা হচ্ছে। এ ঘটনার পরপর জেলা প্রশাসনও তদন্ত কমিটি করেছে। রোববার (৭ মার্চ) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ কমিটি করা হয়।

বন্দি নিখোঁজের ঘটনায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ও ডেপুটি জেলারকে রোববার প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকে বরখাস্ত ও এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (৬ মার্চ) রাতে হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা নিখোঁজ হাজতির সন্ধানের চেষ্টা করছি।

এর আগে শনিবার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ‌‘নিখোঁজ’ হয়েছেন ফরহাদ হোসেন রুবেল নামে হত্যা মামলার এক আসামি। বন্দি গণনাকালে ওই বন্দির অনুপস্থিতির বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। 

শনিবার এ ব্যাপারে প্রথমে কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে একটি জিডি করা হয়। জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানা মোতাবেক গত ৯ ফেব্রুয়ারি রুবেলকে কারাগারে পাঠানো হয়। শনিবার সকাল ৬টা থেকে কারা অভ্যন্তরে অনেক তল্লাশি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৫ নম্বর কর্ণফুলী ভবনের ‘পানিশমেন্ট’ ওয়ার্ডে থাকতেন।

নিখোঁজ হাজতি মো. ফরহাদ হোসেন রুবেল নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মীরেরকান্দি গ্রামের শুক্কুর আলী ভাণ্ডারির ছেলে। রুবেল নগরীর সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি আগ্রাবাদের মিস্ত্রিপাড়া থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

কেএম/ওএফ