দোকানদারকে ফোন করে বাইরে ডেকে স্বর্ণ নিয়ে চম্পট
কৌশলে স্বর্ণের দোকানদারকে ফোন করে বাইরে ডেকে নিয়ে আসা হয়। এরপর তিনি বের হওয়া মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে স্বর্ণ নিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্ত সেই ব্যক্তি। এমন অভিনব কায়দায় চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার হাজারি গলির একটি জুয়েলার্স থেকে চুরি হয় ১৯ ভরি ০৫ আনা ০৪ রতি ওজনের স্বর্ণালংকার।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পুলিশের একটি টিমের হাতে গ্রেপ্তার হয় অভিযুক্ত মো. আমির হোসেন (৩৮)। নগরের চান্দগাঁও থানার মধ্যম মোহরা অচি মিস্ত্রির বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত আব্দুস সালাম।
বিজ্ঞাপন
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪০ থেকে ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যের কোনো এক সময়ে হাজারি গলির উদয়ন জুয়েলার্সে চুরির এ ঘটনাটি ঘটে। দোকানটির মালিকের নাম শিবপদ ধর। অভিযুক্ত আমির ঘটনার আগের দিন ওই দোকানে আসেন। সেখানে তার মেয়ের বিয়ের কথা বলে বিভিন্ন কায়দায় স্বর্ণালংকার দেখেন তিনি। এরপর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পরের দিন আবারও আসার কথা জানিয়ে দোকান থেকে ফোন নম্বর এবং কার্ড নিয়ে বিদায় নেন আমির।
এ ঘটনার পরদিন সকালে দোকানদারকে ফোন দিয়ে আমির বলেন, আমি গতকাল আপনার দোকানে স্বর্ণ কিনতে এসেছিলাম। আজকে আবার দোকানটা চিনতে পারছি না। আমার সঙ্গে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা আছেন। আমি কালী মন্দিরের এখানে আছি। আপনি একটু বের হন।
বিজ্ঞাপন
দোকানদার প্রথমে বের হতে না চাইলেও বারবার ফোন করার একপর্যায়ে বের হন। বের হয়ে মন্দিরের দিকে অগ্রসর হন তিনি। অন্যদিক থেকে তাকে নজরদারিতে রাখেন আমির। দোকানদার একটু অগ্রসর হতেই আমির দোকানে ঢুকে পড়েন এবং দ্রুত লকার খুলে স্বর্ণালংকার নিয়ে সেখান থেকে চলে যান। এদিকে, ফোনে সংযোগ না পেয়ে কয়েক মিনিট পর দোকানদার আবার সেখানে ফিরে আসেন। এসেই তিনি দেখেন তার দোকানের লকার থেকে স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দোকানদার শিবপদ কোতোয়ালি থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সিসিটিভি পর্যালোচনা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করেন। এরপর ওইদিন রাতে অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত আমিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে তার মালিকানাধীন বাড়ির সামনের একটি চায়ের দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে স্বর্ণালংকারগুলো জব্দ করা হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া কোতোয়ালি উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোমিনুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমির একজন পেশাদার চোর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বিভিন্ন জুয়েলার্স, মুদি ও প্রসাধনীর দোকানে লকার এবং ক্যাশবাক্স থেকে চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে তার নামে কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। মূলত যেসব দোকানে একজন থাকে তিনি ওই দোকান টার্গেট করেন। সেখানে প্রথমে গিয়ে একবার কৌশলে রেকি করে আসেন। পরে আরেকদিন গিয়ে সুযোগ বুঝে চুরি করে আসেন। সবশেষ হাজারি গলিতে চুরি করার পর তিনি ধরা পড়েছেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাজারি গলিতে চুরির ঘটনার পর তিন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়। তারা স্বল্প সময়ে আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। এ বিষয়ে শিবপদ ধর বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ (মঙ্গলবার) অভিযুক্ত আমিরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এফকে