রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার রাজ্জাকসহ তিন জনকে অস্ত্রসহ আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা।

গ্রেপ্তাররা হলেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাক (৩৪), সৈয়দ জসিম উদ্দিন (৫০) ও নুর ইসলাম (২৮)।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের আটক করে।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি একনলা বন্দুক, ৩ রাউন্ড এমুনেশন (গুলি), ১টি সুইচ গিয়ার চাকু, ২টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ দুই হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এনায়েত কবীর সোয়েব জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। যাদের মূল নেতৃত্বে রয়েছে ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাক। তারা গত এক মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, পাটুয়াখালী ও কুড়িগ্রামে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করেছে বলে জানা যায়।

এছাড়া তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করতো এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেওয়াসহ অস্ত্র দিয়ে হত্যা ও গুরুতর জখম করত। তারা প্রতি মাসে অন্তত তিনটি ডাকাতি করতো বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ডাকাতির আগে স্থান নির্ধারণ করে বেশ কয়েকবার রেকি করে তারপর অস্ত্রশস্ত্র ও ডাকাতির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে তাদের নির্ধারিত স্থানে ডাকাতি করত।  

গ্রেপ্তার ডাকাত সর্দার রাজ্জাক কিশোরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তার নির্দেশে ডাকাত দলের সব সদস্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করতো। বিভিন্ন এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিদেশ থেকে আগত প্রবাসীদের বাড়িতে এবং বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেপ্তার জসিম বরগুনা জেলার বাসিন্দা। সে চক্রের তথ্য সংগ্রহকারী ও দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করতো। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ ৫টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও সে ২০১৩ সালের মগবাজারের চাঞ্চল্যকর বিদেশির বাড়িতে ডাকাতির সময় কেয়ারটেকার হত্যা মামলার আসামি বলে জানা যায়।

গ্রেপ্তার নুর ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দা। রাজ্জাকের সঙ্গে ডাকাতি চক্রের অন্যতম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিল। নুর ইসলামের আশ্রয়স্থলে ডাকাতির সমস্ত পরিকল্পনা করা হতো এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সব অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি তার দায়িত্বে গোপন আস্তানায় রাখা হতো বলে জানা যায়।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

জেইউ/এসএম