মোদিবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে আগামী ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে এ অনুষ্ঠান হবে। এ সময় দেশে মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে কেউ রাষ্ট্রের সুনাম নষ্ট করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার (১৪ মার্চ) মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে মোদিবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেশে ৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসবে। এটি আমাদের জন্য আনন্দের। উদযাপন নিয়ে কাউকে আন্দোলন না করার অনুরোধ করছি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঠেকাতে একটি গোষ্ঠীর কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। তবে আসন্ন উৎসবের সঙ্গে দেশের সুনাম জড়িত। এজন্য এমন কর্মসূচিকে সরকারবিরোধী না বলে দেশবিরোধী বলছি। যারা ইতোমধ্যে এ ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, আমরা আশা করব তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এ ধরনের দেশবিরোধী ও দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। এমন কোনো কর্মসূচির নামে নাশকতার চেষ্টা করা হলে শক্তভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
উৎসবে আমন্ত্রিত বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে নিরাপত্তার বিষয়ে কম্প্রোমাইজের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে ভিভিআইপি নিরাপত্তার যে প্রটোকল রয়েছে সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।
আসন্ন উৎসবে কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই। তবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার কথা আহ্বান জানান ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার।
সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা ঘোষণা করেছে। ১৭ থেকে ২৬ মার্চ এসব অনুষ্ঠান করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
শুক্রবার (১২ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভবনে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠানমালা ঘোষণা করা হয়। ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানান, মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। অনুষ্ঠানমালায় প্রতিদিন পৃথক থিমভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অডিও-ভিজুয়াল এবং অন্যান্য বিশেষ পরিবেশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
দশ দিনের অনুষ্ঠানমালায় ১৭, ২২ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ১৭, ১৯, ২২, ২৪ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারপ্রধানরা অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
১৭ মার্চের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, ১৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, ২৪ মার্চ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন।
এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে ৫০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া এই পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানসহ অন্য পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানমালায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারণকৃত বক্তব্য প্রচার করা হবে।
নাসের চৌধুরী আরও জানান, ১৭ মার্চের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ১৮ মার্চ কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন, ২০ মার্চ ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আহমেদ আল-ওথাইমিন, ২২ মার্চ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা, ২৪ মার্চ পোপ ফ্রান্সিস, ২৫ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং স্যু-কুয়েন এবং মুক্তিযুদ্ধের বিদেশি বন্ধু তাকাশি হায়াকাওয়ার ছেলে ওসামু হায়াকাওয়া বক্তব্য রাখবেন।
এআর/এইচকে