নিজেকে সুরক্ষিত রেখে বইমেলায় যাবেন : প্রধানমন্ত্রী
গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বইমেলায় যাবেন, বইও দেখবেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। বই পড়ার অভ্যাসটা যেন থাকে, এটা সবাইকে দেখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা বলেন, ‘টিকা দিয়েই কেউ ভাববেন না যে সুরক্ষিত হয়ে গেছি। এই কথাটি আমি বারবার বলছি। টিকা দেওয়ার পরও হাত ধোয়া, মাস্ক পরা থেকে শুরু করে সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন।’
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস অনেক ক্ষতি করেছে। জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে গেছে। এটি কাটিয়ে উঠতে আমরা নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রণোদনা ঘোষণা করেছি, প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকেও সহযোগিতা করেছি। সমগ্র বাংলাদেশে সাত হাজার ৫০০ শিল্পীকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। তাছাড়া অন্যান্য শ্রেণি-পেশার লোকদেরও সহযোগিতা করেছি, কেউ বাদ যায়নি।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ওয়েব (ঢেউ) শুরু হয়ে গেছে। টিকা দিয়ে সুরক্ষিত মনে করবেন না। মাস্ক পরবেন, হাত ধোবেন ও দূরত্ব রক্ষার মাধ্যমে নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত রাখবেন। বইমেলায় যাবেন, ধরবেন। কিন্তু নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ছোটদের বইয়ের প্রতি ঝোঁক বাড়ানো দরকার। আমাদের সময় বাচ্চাদের বই পড়ে শোনানো হতো। এখনও আমরা তা করি। সব সময় ঘরে একটা ছোট লাইব্রেরি করে রাখি। বইয়ের প্রতি ঝোঁক বাড়াতে হবে। পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে মানুষের কাছে যত দ্রুত পৌঁছানো যায়। সাহিত্যে আরও আগে পৌঁছানো যায়। সাহিত্যের মাধ্যমে ইতিহাস, ভাষা-সংস্কৃতিও জানা যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তো মোবাইল ডিভাইসেও পড়ার সুযোগ আছে। তবে বই হাতে নিয়ে বইয়ের পাতা উল্টিয়ে পড়ার আনন্দই আলাদা। বইয়ের আবেদন মুছে যাবে না। সেজন্য প্রকাশকদের ধন্যবাদ, মহামারির সময়েও অনেক কষ্ট করেছেন।
এ সময় শহীদ দিবস ও ভাষা আন্দোলনের নানা ইতিহাস তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে জানতে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের নানা রিপোর্ট সাত খণ্ডে প্রকাশ করেছি। এগুলো পড়লেই বোঝা যাবে বঙ্গবন্ধু কীভাবে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন, আন্দোলনের সমন্বয় করেছেন। এখন অনেকে প্রশ্ন তোলেন, উনি জেলে ছিলেন, উনি আবার কবে আন্দোলন করলেন? আমার কথা হলো- উনি জেলে গেলেন কেন? ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তো তারই পরামর্শে হয়েছে। আর সেই আন্দোলন শুরু হলেই তো তিনি গ্রেফতার হন।
বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ গ্রহণ করেছেন ১০ সাহিত্যিক। ১০টি ক্যাটাগরিতে তাদেরকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বিজয়ী সাহিত্যিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিকরা হলেন- কবিতায় কবি মুহাম্মদ সামাদ, কথাসাহিত্যে ইমতিয়াজ শামীম, প্রবন্ধ সাহিত্যে বেগম আখতার কামাল, অনুবাদে সুরেশ রঞ্জন বসাক, নাটকে রবিউল আলম, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, মুক্তিযুদ্ধে সাহিদা বেগম, বিজ্ঞান ও কল্পবিজ্ঞানে অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনি বিভাগে ফেরদৌসী মজুমদার এবং ফোকলোর বিভাগে হাবিবুল্লাহ পাঠান।
এইউএ/এফআর/এমএমজে