সক্রিয় করোনা রোগী ৩৯৭৮৩, হাসপাতালবিমুখ ৩৬৭১৬
সংক্রমণ বাড়লেও হাসপাতালগুলোতে খালি পড়ে আছে ৭৩ শতাংশের বেশি করোনা শয্যা
হঠাৎ দেশে বেড়েছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। কিছুদিন আগেও যেখানে দৈনিক শনাক্ত ৩০০ এর নিচে নেমে গিয়েছিল; ভাইরাসটিতে এখন প্রতিদিনই দুই হাজারের আশপাশে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন। ১০-এর নিচে নেমে যাওয়া মৃত্যু এখন ২০-এর ঘরেই থাকছে।
তবে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু দৃষ্টিগোচর হারে বাড়লেও দেশের হাসপাতালগুলোতে ৭৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ অর্থাৎ সাত হাজার ৬৯৭টি করোনা শয্যা খালি পড়ে আছে। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ১০ হাজার ৪৭৪টি করোনা শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র দুই হাজার ৭৭৭টি শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড ৫৬৮ আইসিইউ শয্যার মধ্যে ২৯০টিতে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন; খালি পড়ে আছে বাকি ৪৮.৯৪ শতাংশ অর্থাৎ ২৭৮টি।
বিজ্ঞাপন
সাধারণ ও আইসিইউ মিলিয়ে দেশে সাত হাজার ৬৯৭টি করোনা শয্যা খালি রয়েছে। মোট তিন হাজার ৬৭ করোনা রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রোববার (২১ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ১৭২ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৮ জনে। ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটি কেড়ে নিয়েছে ২২ জনের প্রাণ। এতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৬৯০ জনে।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক আজকের বিজ্ঞপ্তিটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ২২ হাজার ৪০৫ জন। মারা গেছেন আট হাজার ৬৯০ জন। মোট শনাক্ত থেকে মৃত্যুবরণ করা ও সুস্থ হওয়াদের বাদ দিলে দেশে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ৩৯ হাজার ৭৮৩ জন।
এই ৩৯ হাজার সক্রিয় করোনা রোগীর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মাত্র তিন হাজার ৬৭ জন। এর মধ্যে সাধারণ শয্যায় দুই হাজার ৭৭৭ ও আইসিইউ শয্যায় ২৯০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি ৩৬ হাজার ৭১৬ জন করোনা রোগী নিজস্ব ব্যবস্থায় বাসা-বাড়িতে রয়েছেন।
ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যু
গত ১০ জানুয়ারি দেশে করোনায় এক হাজার ৭১ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর টানা দুই মাস দৈনিক শনাক্ত হাজার ছাড়ায়নি। কমতে কমতে নেমেছিল ৩০০-এর নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ২৯১ জন। ১০ মার্চ থেকে ফের হাজার ছাড়ায় সংক্রমণ। এরপর থেকে দৈনিক ঊর্ধ্বমুখী থাকে করোনায় সংক্রমণ। সংক্রমণের সঙ্গে বাড়ে মৃত্যুর হারও।
গত ১০ মার্চ থেকে আজকে পর্যন্ত ১১ দিনে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৭৭৪ জন। এর আগের ১১ দিনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ছয় হাজার ৬৬৩ জন। অর্থাৎ পরবর্তী ১১ দিনে ১১ হাজার মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময় ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ১৮৮ জন। এর আগের ১১ দিনে মারা গেছেন ৯৪ জন। অর্থাৎ এই ১১ দিনে মৃত্যু দ্বিগুণ বেড়েছে।
| তারিখ | শনাক্ত | মৃত্যু | হাসপাতালে মৃত্যু | বাড়িতে মৃত্যু |
| ১১ মার্চ | ১০১৮ | ৭ | ৭ | ০ |
| ১২ মার্চ | ১০৫১ | ৬ | ৬ | ০ |
| ১৩ মার্চ | ১০৬৬ | ১২ | ১১ | ১ |
| ১৪ মার্চ | ১১৫৬ | ১৮ | ১৮ | ০ |
| ১৫ মার্চ | ১৭৭৩ | ২৬ | ২৬ | ০ |
| ১৬ মার্চ | ১৭১৯ | ২৬ | ২৬ | ০ |
| ১৭ মার্চ | ১৮৬৫ | ১১ | ১১ | ০ |
| ১৮ মার্চ | ২১৮৭ | ১৬ | ১৬ | ০ |
| ১৯ মার্চ | ১৮৯৯ | ১৮ | ১৬ | ২ |
| ২০ মার্চ | ১৮৬৮ | ২৬ | ২৬ | ০ |
| ২১ মার্চ | ২১৭২ | ২২ | ২২ | ০ |
| মোট | ১৭৭৭৪ | ১৮৮ | ১৮৫ | ৩ |
করোনার টিকা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৭ জন। এদের মধ্যে মোট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ৯০০ জনের। টিকার জন্য মোট নিবন্ধন করেছেন ৬১ লাখ ১৫ হাজার ৫৫২ জন।
করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে মোট ৫৪১ ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হয়। আর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। এদিনে সারাদেশে টিকা নেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৩ হাজার ৮৫৭ জন এবং নারী সাত হাজার ৩০৩ জন।
এফআর