যাত্রাবাড়ীর সড়ক অবরোধ। পরে পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করে অবরোধমুক্ত করে

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার সড়ক অবরোধমুক্ত হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী মাদরাসার শিক্ষার্থীরা শুক্রবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় মূল সড়ক অবরোধ করে রাখে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দিতে বলা হলেও রাত ৯টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে ওয়ারী বিভাগের ডিসি ইফতেখার শাহ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলন তা সমঝোতার ভিত্তিতে সরানো যায়নি। পরে আমরা বাধ্য হয়ে বল প্রয়োগ করে তাদের সরিয়ে দিয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক, যান চলাচলও স্বাভাবিক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে পুলিশের পক্ষ থেকে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলে পরে পুলিশ টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ এখন কুতুবখালী মাদরাসার সড়কটি ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। যাতে কেউ মাদরাসা থেকে বের হয়ে ফের সড়ক অবরোধ করতে না পারে।       

এর আগে যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম কাজল ঢাকা পোস্টকে জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী মাদরাসার সামনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। ফলে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

এদিকে, মোদির সফরকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন মুসল্লিরা। সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তারা চিকিৎসা নেন। আহতদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী রয়েছেন।

এছাড়া চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মোদির সফরের প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। শুক্রবার (২৬ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- রবিউল ইসলাম (২৩), মেরাজুল ইসলাম (২২) মিরাজুল ইসলাম, জামিল (২০) ও মিজান (৪০)। চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে, চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা সদরের বিভিন্নস্থানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভের ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক তরুণ নিহত হন। তবে বিক্ষোভে কোনো নিহতের ঘটনা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান।

শনিবার বিক্ষোভ, রোববার হেফাজতের হরতাল

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে দেশের দুই স্থানে সংঘর্ষে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী নিহতের ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং রোববার (২৮ মার্চ) হরতালের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।

এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ ঘোষণা দেন। শুক্রবার (২৬ মার্চ) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন হেফাজতে ইসলামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউল্লাহ আমিনী।

জেইউ/এমএসি/এমএআর