সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্ক সুসংহত হবে
কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী
বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধুপ্রতীম দেশ নেপাল। হিমালয়ের এই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে রাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক। সম্প্রতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। নেপালের রাষ্ট্রপতির সফরসহ কূটনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আরাফাত জোবায়ের।
ঢাকা পোস্ট: লকডাউন ও করোনাকীলন সব পেশার জন্যই চ্যালেঞ্জিং। কূটনীতিকদের জন্য সেই চ্যালেঞ্জটা কেমন?
বিজ্ঞাপন
সালাহউদ্দিন নোমান: সবার জন্যই সময়টা কঠিন ছিল। স্বাভাবিক চলাচল ছিল না। এর মধ্যেও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো চলমান ছিল। সেগুলো খুব সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে হয়েছে। লকডাউন, করোনাকালীন চ্যালেঞ্জ অনেকটাই আমরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। এখন ধীরে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করি আমরা আগের স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে যাব।
ঢাকা পোস্ট: অন্যান্য দেশের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কূটনীতিকদের ভূমিকাটা একটু বেশি কিনা বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে?
বিজ্ঞাপন
সালাহউদ্দিন নোমান: প্রত্যেকটি দেশেই আমাদের কাজের সুযোগ রয়েছে। তবে অবশ্যই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কাজের পরিধি ও সুযোগ একটু বেশি। ভাষা, সংস্কৃতি, জাতীয়তা অনেক কিছুর সঙ্গে এ অঞ্চলের সামঞ্জস্যতা রয়েছে। প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক দৃঢ়। অনেক সুযোগ রয়েছে বিভিন্ন বিষয়গুলোকে সংযুক্ত করার।
ঢাকা পোস্ট: ক্রীড়া ও সংস্কৃতির মাধ্যমে কূটনীতিতে কীভাবে ভূমিকা রাখছেন?
সালাহউদ্দিন নোমান: ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানোর দায়িত্ব তো আমাদেরই। আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি। আমাদের বিশেষ দিবসগুলোতে নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করি। সম্প্রতি ৭ মার্চ ও ১৭ মার্চে এ রকম আয়োজন করেছিলাম। আমাদের এ অনুষ্ঠানগুলোতে অন্যরাও আমন্ত্রিত থাকেন। ফলে একটা সংস্কৃতিক বিনিময় হয়ে থাকে।
ঢাকা পোস্ট: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নেপালের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফর করেছেন। আপনিও ছিলেন সেই সফরে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নেপালের রাষ্ট্রপতির এ সফর বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্ক কেমন মাত্রা পাবে বলে মনে করেন।
সালাহউদ্দিন নোমান: সফরটি আমার কাছে অত্যন্ত সফল মনে হয়েছে। দুই দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের মধ্যে খুব আন্তরিক ও সৌহাদ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমি আশা করি এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরের পর সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক দুই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ও নেপালের সম্পর্ক সুসংহত হবে।
ঢাকা পোস্ট: আগে কূটনীতির বড় জায়গা জুড়ে ছিল রাজনীতি। সাম্প্রতিক সময়ে কূটনীতির ক্ষেত্রে অর্থনীতি কতটা প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে?
সালাহউদ্দিন নোমান: এখন অর্থনৈতিক সম্পর্কিত বিষয়গুলো একটু বেশি সামনে আসছে। এ রকম অনেক বিষয় সময়ের প্রেক্ষাপটে আসে। তবে আমরা কূটনীতিকরা আমাদের মৌলিক নীতি ও জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেই।
ঢাকা পোস্ট: নেপালের অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশে পড়াশোনা করেন। এর অধিকাংশই মেডিকেল শিক্ষার্থী। করোনাকালীন ও এখন এই শিক্ষার্থীদের ভিসা এবং অন্যান্য বিষয়াদিগুলো কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে?
সালাহউদ্দিন নোমান: বাংলাদেশের শিক্ষার ব্যাপারে নেপালীদের আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে মেডিকেল কলেজগুলোতে। বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজেগুলোতে পড়াশোনা করে তারা বেশ তৃপ্ত। সেভাবে আমরা সর্বাত্মক আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করি ভিসাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করার। করোনাকালীন আমরা মেডিকেল কলেজ, বিমান সংস্থা ও শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছি। ফলে তেমন কোনো জটিলতা হয়নি।
এজেড/এসএম