বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস উপলক্ষ্যে নৌবাহিনীর সেমিনার
বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস' উপলক্ষ্যে বুধবার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর মাল্টিপারপাস হলে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
বিজ্ঞাপন
আইএসপিআর জানায়, সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে জাতীয় হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির সকল সংস্থা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সহযোগী সংস্থার উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরা এবং মেরিটাইম সংস্থার সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সমুদ্রের ডিজিটাল টুইন সৃষ্টিতে হাইড্রোগ্রাফির অবদান'।
প্রসঙ্গত, ডিজিটাল টুইন সৃষ্টি হচ্ছে সমুদ্রের হাই রেজুলেশন, স্থিতিশীল ও বাস্তব সময়ের ভার্চুয়াল প্রতিলিপি তৈরি করা। এর মাধ্যমে সমুদ্রের বিভিন্ন গতি-প্রকৃতি ও এর প্রভাবসমূহ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে।
বিজ্ঞাপন
আইএসপিআর আরও জানায়, সেমিনারে সমুদ্র সুরক্ষা, পারস্পারিক হাইড্রোগ্রাফিক সহযোগিতা, সমুদ্রের ডিজিটাল টুইনসহ সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। আলোচনার মাধ্যমে সমুদ্র সংক্রান্ত জ্ঞান সর্বসাধারণ ও সমুদ্র বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের মাঝে সহজে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সমুদ্র বিজ্ঞানী, সমুদ্র ব্যবহারকারী সংস্থা ও দেশসমূহের মাঝে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। সেমিনারে বক্তারা এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে জ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে হাইড্রোগ্রাফিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থার ৭০তম দেশ হিসেবে সদস্যপদ লাভ করে । সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০৫ সাল থেকে এ দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে আসছে। এর আগে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৩ সালে সমুদ্র এলাকায় হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ পরিচালনা এবং নটিক্যাল চার্ট প্রকাশের দায়িত্ব বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উপর ন্যস্ত করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সমুদ্র এলাকার জন্য আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক অর্গানাইজেশন (আইএইচও) এর মান বজায় রেখে নটিক্যাল চার্ট প্রকাশ করে আসছে।
ইতিমধ্যে, বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় নিরাপদ ন্যাভিগেশনের জন্য আন্তর্জাতিক সিরিজের চার্টসহ ন্যাশনাল সিরিজের পেপার ও ইলেক্ট্রনিক চার্ট প্রকাশের মাধ্যমে শতভাগ এলাকার চার্ট কভারেজ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এসকল পেপার ও ইলেক্ট্রনিক চার্টসমূহ সমগ্র বিশ্বে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে যা দেশি বিদেশি মেরিনারগণ নিয়মিত ব্যবহার করছেন। তাছাড়া এসকল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য-উপাত্ত সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনা, প্রাণীজ ও খনিজ সম্পদের ব্যবহার, মৎস্য আহরণ, সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, সুনামি-বন্যা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব মডেলিং, উপকূলীয় জোন ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক পর্যটন এবং সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এমএসি/এসকেডি