কোরবানির ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি। ইতোমধ্যে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। গরু থেকে শুরু করে মহিষ, ছাগল, দুম্বাসহ নানা পশুর পসরা বসেছে কোরবানি হাটে। হাটগুলোতে গরুর ব্যবসায়ীরা কায়দা করতে পারলেও তেমন চাহিদা না থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন মহিষ ব্যবসায়ীরা। লাভজনক বিক্রি তো নেই বরং চালান তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী ঐতিহ্যবাহী পশুর হাট ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাবতলী হাটে চার/পাঁচদিন আগে থেকেই এসেছেন‌ ব্যবসায়ীরা। এ কয়েকদিনে ব্যবসায়ীদের তেমন মহিষ বিক্রি হয়নি। অন্যদিকে হাটে রয়েছে বেশ কিছু দুম্বা। দুম্বাগুলোর ওজন প্রায় এক থেকে দুই মণ। চাহিদা থাকায় ইতোমধ্যে দশটির মতো দুম্বা বিক্রি হয়েছে।

গাবতলী হাটের পশ্চিম পাশে দুম্বার দেখাশুনা করা মোহাম্মদ রিপন বাবু ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুম্বাগুলো গাবতলী হাটের স্থায়ী। এবার ঈদ উপলক্ষ্যে ১৬টি দুম্বা উঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে গত কয়েকদিনে দশটি দুম্বা বিক্রি হয়ে গেছে। অবশিষ্ট রয়েছেন ৬ টি। এসবের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দুম্বার ওজন দেড় মণ। এটির দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা। ক্রেতারা এর সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকিয়েছেন। এছাড়া সর্বনিম্ন এক মণ ওজনের দুম্বার দাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। ক্রেতারা সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দরদাম করেছেন।

তিনি বলেন, বাজারে একমাত্র আমরাই সবসময় উট নিয়ে আসি। কিন্তু এবারের যে উটের দাম সেটি কারো কেনার সামর্থ্য হবে না, তাই এবার আমরা বাজারে উট আনিনি। গতবার আমরা উট কিনেছিলাম ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে। এবার উটের কেনা দাম প্রায় ২৫ লাখ টাকা।

বাজার ঘুরে মহিষের বিভিন্ন দাম দেখা গেছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিকট। কারো কাছে একই ওজনের মহিষের দাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আবার কারো কাছে ওই একই ওজনের মহিষের দাম ১ লাখ ৬০-৬৫ হাজার টাকা। তবে দাম যাই হোক না কেন, তেমন করে ক্রেতারা তাদের কাছে আসছেন না বলে জানিয়েছেন তারা।

কুষ্টিয়া থেকে ১১টি মহিষ নিয়ে গাবতলী হাটে এসেছেন মোহাম্মদ বজলু। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত চারদিন আগে গাবতলী হাটে এসেছি। এখন পর্যন্ত কোনো মহিষ বিক্রি করতে পারিনি। আমার কাছে থাকা সর্বনিম্ন ছয় মণ ওজনের মহিষের দাম ২ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৩ মন ওজনের মহিষের দাম ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। ক্রেতারা শুধু দাম করে যান, তবে কোনো কিছু বলেন না।

বরিশালের পটুয়াখালী থেকে রিয়াজ মওলা ২৫টি মহিষ নিয়ে গাবতলী হাটে এসেছেন গত চারদিন আগে। তিনিও এখন পর্যন্ত কোনো মহিষ বিক্রি করতে পারেননি। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, তার কাছে থাকা সর্বনিম্ন চার মণ ওজনের দাম ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১৪০ হাজার টাকা। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৮ মণ মহিষের ওজন ১ লাখ ৭০ থেকে ২ লাখ টাকা।

মেহেরপুর থেকে আসা জহুরুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৩টি মহিষ নিয়ে গত চারদিন আগে গাবতলী হাটে এসেছি। এর মধ্যে পাঁচটি মহিষ বিক্রি করা হয়েছে। সেগুলো বিক্রি করে মোটামুটি চালান উঠে এসেছে। তেমন লাভ হয়নি। এখনো ৮টি মহিষ অবশিষ্ট আছে। এরমধ্যে চার মণ ওজনের মহিষের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা এবং ৮ মণ ওজনে মহিষের দাম ২ লাখ টাকা।

এমএইচএন/এফকে