ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন দুই নারী। এ সময় প্রতারক চক্রের সদস্যরা কৌশলে তাদের কাছে থাকা কানের দুল, নগদ টাকা এবং অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা ও সাড়ে ১২টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী দুই নারী হলেন, আমেনা বেগম (৫০) ও রেখা বেগম (৫১)।

ভুক্তভোগী আমেনা বেগম বলেন, আজ ১ মাস যাবত আমার মেয়ে ঢাকা মেডিকেলের ১০৯ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। আমার মেয়ের পিত্ত থলি ফুলে যাওয়ায় অপারেশন করা হয়। তাকে হাসপাতালে আমি দেখাশোনা করি। আজ সকালে আমার মেয়ের কয়েকটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য পুরান ভবন থেকে নতুন ভবনে রান্না ঘরের পাশের সরু গলি দিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় সরু গলিতে দাঁড়িয়ে থাকা ৩ জন ব্যক্তি আমাকে এখানে কে ভর্তি, কোথায় যাচ্ছি এসব জিজ্ঞেস করেন। কথা বলার এক পর্যায়ে তারা আমার হাতে প্যাকেটে মোড়ানো একটি ইটের টুকরা দেয়। এরপর আমার কানের দুল, মোবাইল ও টাকা আমি তাদের কাছে দিয়ে দিই। কিছুক্ষণ পর আমার জ্ঞান আসলে তাড়াতাড়ি ওয়ার্ডে গিয়ে আমার স্বামীকে বিষয়টি জানাই এবং আমার ছেলেকে ফোন করি।

তিনি আরও বলেন, আমি পরিবার নিয়ে কামরাঙ্গীরচর থাকি। আমাদের বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান থানার ফরাজী এলাকায়। আমরা বিষয়টি শাহবাগ থানাকে জানিয়েছি।

আরেক ভুক্তভোগী রেখা বেগম বলেন, গত সোমবার আমার মাকে নিয়ে নরসিংদীর মনোহরদী থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসি। বর্তমানে আমার মা ২০৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। দুপুরে পুরান বিল্ডিং থেকে নতুন বিল্ডিং আসার সময় দুই ব্যক্তি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তখন তারা আমাকে বলে আমার কিছু মালামাল আছে সেগুলো একটু দেখে রাখেন, আমরা আসছি। এ সময় তারা আমার হাতে একটি প্যাকেট দিয়ে বলে এর মধ্যে ১৫ হাজার টাকা আছে। হাতে দেওয়ার পরে আমার কিছু মনে নেই। আমার কানে থাকা ছয় আনা ওজনের কানের দুল খুলে নিয়ে যায়। আমি গ্রাম থেকে আসছি কোনো কিছুই বুঝতে পারছি না।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আজকে সকাল ও দুপুরে দুটি প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয় দুটি শাহবাগ থানাকে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো আছে। এখানে যারা সেবা নিতে আসেন তাদের অনুরোধ করব, অপরিচিত কারো সঙ্গে কথাবার্তা, যোগাযোগ এবং কোন লেনদেন করবেন না। এখানে যারা সরকারি কর্মচারী আছেন একমাত্র তাদেরই সেবা নেবেন। তারপরও দেখা যায়, প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন কায়দা করে সর্বস্ব নিয়ে যায়। আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি। প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে সিসিটিভির ফুটেজ চাইলে আমরা তাদের দিয়ে দেব।

এসএএ/এসকেডি