করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে ১৮টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ৫০ ভাগ আসন খালি রেখে গণপরিবহনে যাত্রী বহনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্দেশটি বাস্তবায়নে ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে লঞ্চের ভাড়া।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। সিদ্ধান্তটি আজ থেকে বাস্তবায়ন হবে বলেও জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ও লঞ্চ মালিকদের আমরা দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা আলোচনা করে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। সেটা নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করেছি। আমরা মনে করেছি যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে গেলে ভাড়া বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, মালিকরা সম্মত হয়েছেন। তারা ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন করবেন। আমরা যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ৬০ ভাগ ভাড়া বৃদ্ধি করেছি। তবে এটি কেবিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে।

ভাড়া শুধু আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বাড়লো নাকি ঈদ পর্যন্তই কার্যকর থাকবে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যতদিন পর্যন্ত করোনার ইস্যু থাকবে...এটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ভাড়া বাড়ানো, অন্য কোনো বিষয় নয়। যে স্বাস্থ্যবিধি দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ নির্দেশনাবলি, সেটাকেই অনুসরণ করা হবে।

আসন খালি রেখে চলার ক্ষেত্রে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা গতকাল অনুরোধ জানিয়েছিলাম যাত্রীদের, প্রয়োজন না হলে কেউ যেন স্থানান্তর না হয়। শক্তি প্রয়োগ করে স্বাস্থ্যবিধি মানানো খুব কঠিন ব্যাপার। আমাদের জনবহুল এই দেশে যদি সবাই সচেতন না হই, তাহলে এটি খুব কষ্টসাধ্য।

আমাদের লঞ্চের সংকট আছে। যদি সবাই লঞ্চে উঠতে চায়, প্রটোকল ধরে রাখা সম্ভব না। সরকারের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে, আমরা ঈদযাত্রা বা স্থানান্তর না হই।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্যকে সুরক্ষা তখনই দিয়ে পারব, যখন নিজেকে সুরক্ষিত রাখব। নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যদি দায়িত্ববান হই তাহলে সবকিছুই মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে পারব।

দেশকে সুরক্ষার জন্য লঞ্চ মালিকদেরও দায় আছে উল্লেখ করে সরকারের এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা যেন ব্যবসায়িক চিন্তা পরিহার করে সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে কাজগুলো করে। তারাও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন।

এর আগে বুধবার দুপুরে ভাড়া বাড়ানো সংক্রান্ত প্রস্তাবের চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক।

প্রস্তাবে বলা হয়, শুধু করোনা সংক্রমণকালীন অর্থাৎ সরকারি প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত সময়ের জন্য লঞ্চের যাত্রীর ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা/সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে বিআইডব্লিউটিএ। সভায় লঞ্চের যাত্রীর ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সবার ঐকমত্যে পৌঁছায়। ১০০ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া প্রতি কিলোমিটার এক টাকা ৭০ পয়সা; এর বেশি দূরত্বে প্রতি কিলোমিটার এক টাকা ৮০ পয়সা; এছাড়া জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ টাকা। এমতাবস্থায় ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ভাড়া নির্ধারণের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়।

এসএইচআর/এমএইচএস