সৎ শাশুড়ির দেওয়া আগুনে পুড়ে ফরিদা আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূ মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩১ মার্চ) সকাল পৌনে ৭টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। 

ফরিদা আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার দেবগ্রামের আব্দুল আওয়ালের মেয়ে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, স্বামী, শ্বশুড় ও সৎ শাশুড়ি নির্যাতন করে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে তার শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে যায়। মারা যাওয়ার আগে ওই গৃহবধূ নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। যা ভিডিও করে রাখা হয়েছে। এ ভিডিওটি ঢাকা পোস্টের কাছে সংরক্ষিত আছে।

নিহতের বড় ভাই মো. আজাদ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বামীর বাড়ির লোকজন আমার বোনকে নির্যাতন করে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করেছে। ২০১৯ সালে বিয়ের পর থেকেই তারা আমার বোনকে নির্যাতন করত। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আমার বোনের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর খবর পেয়ে আমরা গিয়ে প্রথমে তাকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করি। সেখান থেকে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমরা তাকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু ফরিদার স্বামী জাকারিয়া রাছেল তাতে বাধা দেয়। বোনের কষ্ট দেখে আমরাই তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করি। সেখানে আনার পর তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে গতকাল আমার বোন মারা যায়।

তিনি বলেন, আমার বোনের বাচ্চা দুবার নষ্ট করে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন। এখন তারা বলছে, সেক নিতে গিয়ে শরীরে আগুন ধরে যায়। যদি তাই হতো তাহলে সবার আগে তার হাত পোড়ার কথা ছিল। কিন্তু শুধু তার পেছনের অংশ পুড়ে গেছে। আমি তাদের সবার শাস্তি চাই। 

নিহতের স্বামী জাকারিয়া রাছেল অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা কেন তার গায়ে আগুন দেবো? সেক নিতে গিয়ে তার শরীরে আগুন ধরে যায়। কি কারণে ফরিদা সেক নিচ্ছিলেন জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারেননি রাছেল।

নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি তাকে হাসপাতালে আনা থেকে শুরু করে সব কিছুই করেছি। আমার ২ মাসের বাচ্চার কি হবে এখন সেই চিন্তায় আছি।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর বাচ্চু মিয়া বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে আজ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এসকেডি