বন্যাকবলিত দুর্গম এলাকায় পুলিশের ‘ভালোবাসার থলে’
নেই বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক, ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। টানা তিন দিন পানিতে তলিয়ে ছিল পুরো এলাকা। পানি নামতে শুরু করলে দুর্গম হওয়ায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছেনি সরকারি-বেসরকারি সাহায্য। সবার নজর এড়িয়ে গেলে ত্রাণ তৎপরতার দ্বিতীয় দিনে শনিবার (১২ আগস্ট) সেখানেই পৌঁছে গেল সাতকানিয়া থানা পুলিশ।
এদিন নলুয়া ইউনিয়নের বিল্লা পাড়া ও আশেপাশের ওই এলাকার বাসিন্দাদের পুলিশের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবারকে দেওয়া একটি করে ‘ভালোবাসার থলে’। যেখানে থাকা খাদ্যসামগ্রী দিয়ে অন্তত কয়েকদিন জুটবে ভুক্তভোগীদের আহার।
বিজ্ঞাপন
হঠাৎ পুলিশের পক্ষ থেকে এমন সাহায্য পেয়ে খুশি ওই এলাকার বাসিন্দা ও ষাটোর্ধ আসহাব মিয়া (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, আমরা পানির নিচে ছিলাম। দুর্গম হওয়ায় পানি নামার পরও কেউ দেখতে আসেননি। সবাই ওপরে ওপরে ত্রাণ দিয়ে চলে গেছে। আজকে (শনিবার) পুলিশ ঝুঁকি নিয়ে নৌকাযোগে এসে আমাদের ত্রাণ দিয়েছে। ওসি সাহেব নিজে এসে আমাদের দেখে গেছেন। আমাদের দোয়া ছাড়া কিছু করার নেই।
বিজ্ঞাপন
জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, সীমিত পরিসরে ত্রাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকা বেছে নিচ্ছি। নলুয়া ইউনিয়নের ওই এলাকাটি একেবারে এলাকাটি দুর্গম। শনিবার আমরা সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমানের নেতৃত্বে সেখানে পৌঁছে একটি টিম ত্রাণ বিলি করেছি। দুর্গম এলাকায় আমাদের ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। তবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় নিজেদের উদ্যোগে আমরা বন্যাকবলিত সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া থানা এলাকায় সামান্য ত্রাণ বিলি করছি।
জানা গেছে, টানা ভারী বর্ষণ, সাংগু ও ডলু নদী ও হাঙ্গর খাল দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) থেকে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) টানা তিন দিন তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ সময়ে পানিতে তলিয়ে তিন উপজেলায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়। ভেসে যায় ফসলের খেত এবং মাছের প্রজেক্ট। স্রোতের তোড়ে সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেসে যাওয়া এবং সড়কে বড় বড় গর্তের কারণে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম আকার ধারণ করছে বন্যা কবলিত এলাকায়।
এমআর/এসকেডি