১৭ বছর জাল সনদে চাকরি করেন গৃহায়ণের সেই দেলোয়ার
ফাইল আটকে রাখা এবং ফাইল গায়েব করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ১ আগস্ট জাতীয় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেনকে তার নিজ কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই সময়েই সনদ জালিয়াতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে।
সেই দেলোয়ারের বিরুদ্ধে এবার এইচএসসি পরীক্ষা পাসের জাল সনদ দিয়ে ১৭ বছর চাকরি করার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিজ্ঞাপন
সনদ জাল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৬, ৪০, ৪৭ এবং ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি দেলোয়ার হোসেন ২০০৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে জাল কাগজপত্র তৈরি করে সরকারি চাকরি গ্রহণ করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আর আগে অভিযোগের বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব দেবময় দেওয়ানকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়। তদন্ত কর্মকর্তাও ১ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আরও পড়ুন : ফাইল গায়েব করে সম্পদের পাহাড়
আসামি মো. দেলোয়ার হোসেন ২০০৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হিসাব সহকারী হিসেবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষে যোগদান করেন। বর্ণিত পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ। আবেদনের সময় তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশংসা পত্র দাখিল করলেও কোনো সনদপত্র দাখিল করেননি। তিনি শুধুমাত্র এইচএসসির পরীক্ষার প্রশংসাপত্র দাখিল করেছিলেন। অথচ তিনি ২০১৯ সালে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে পাস করেছেন এমন প্রমাণ গৃহায়ণের কর্মকর্তার কাছে দাখিল করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে এইচএসসির প্রশংসাপত্র দিয়ে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বিবেচ্য পদে নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই। অপরদিকে মৃত আবদুল অহিদের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেনের নামে এইচএসসির সনদ ২০১৯ সালে কুমিল্লা বোর্ড কর্তৃক ইস্যু হওয়ায় উক্ত নামে ২০০৭ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিকট তার এইচএসসির সনদ জমা দিয়ে চাকরি গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি জাল সনদ সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি চাকরি গ্রহণ করে ২০০৭ সাল থেকে অদ্যাবধি সরকারি কোষাগার থেকে বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ফাইল আটকে রেখে, ফাইল গায়েব করে, সেবা গ্রহীতাদের জিম্মি করে তাদের থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করার নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি করে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। মো. দেলোয়ার হোসেন লালমাটিয়ার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে বসবাস করলেও তার নামে সরকারি বরাদ্দকৃত কোয়াটারটি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।
আরএম/এসকেডি