লঞ্চে জায়গা নেই, হেঁটেই বাসায় ফিরতে হচ্ছে
চলমান করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় সরকার সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। রাজধানীতে আটকে পড়ার ভয়ে বাড়ি ফেরার জন্যে রোববার (৪ এপ্রিল) রোববার সকাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীরা ভিড় করেছেন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। লঞ্চে জায়গা পেয়ে অনেকেই হেঁটে বাসায় ফিরছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। সবাই ঘরমুখী হওয়ায় লঞ্চের মধ্যেও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ ঠিকই ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে সবাইকে। আবার কেউ কেউ বলছেন, বাড়ি ফেরার এমন চেষ্টায় মনে হচ্ছে রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে করোনার প্রকোপ এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও বিস্তার করবে।
বিজ্ঞাপন
রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত যাত্রীরা লঞ্চে জায়গা নিতে চেষ্টা করেন। মানুষের চাপ বেশি হওয়ায় অনেকেই লঞ্চে উঠতে পারেননি। সবাই একযোগে বাড়ি যাওয়ার কারণে লঞ্চে কেবিন পাওয়া যাচ্ছে না।
বিকেল থেকে লঞ্চে উঠার জন্যে অপেক্ষমান ফাতেমা খানম বলেন, এতো মানুষের ভিড়ে জায়গা পাচ্ছি না। ঝড়-বৃষ্টির কারণে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এখনো লঞ্চে জায়গা পাইনি, তাই বাসায় চলে যাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন
লঞ্চ টার্মিনাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাপ বেশি থাকায় আমরা চাইলেও নির্ধারিত যাত্রী তুলতে পারছি না। ঠেলেঠুলে যাত্রীরা উঠে পড়ছেন। এরপরও আমরা বারবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলছি। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, ভাড়া দ্বিগুণ হলেও গাদাগাদি করে বেশি যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। অনেকে আবার ভালো জায়গা ধরার উদ্দেশ্যে চার-পাঁচ ঘণ্টা আগে টার্মিনালে এসে অবস্থা করছেন।
চাঁদপুরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে চার ঘণ্টা আগে টার্মিনালে এসেছেন হাসনাত করিম। বলেন, একযোগে সবাই বাড়ি ফিরছেন। এ কারণে কেবিন পাওয়া যাচ্ছে না। ডেকে বা সিটে গাদাগাদি করে যেতে হচ্ছে। সবারই তাড়া বাড়ি ফেরার।
‘স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সবাই জানলেও তা মানছেন না কেউ। সরকার গতকাল লকডাউনের ঘোষণা দেয়। এবার শুনছি খুবই কড়াকড়ি হবে। এ সময় ঢাকায় যাতে আটকে না পড়ি সে কারণে বাড়ি ফেরা। ভালো আসনের আশায় চার ঘণ্টা আগে এখানে আসা। কিন্তু আমার মতো অনেকেই আগে উপস্থিত হয়েছেন। আসলে কারোরই করার কিছু নেই।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবহন বিভাগের উপপরিচালক এহতেশামুল পারভেজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য যাত্রীদের সবসময় নির্দেশনা দিচ্ছি। প্রত্যেকটা লঞ্চে কড়াকড়ি নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবুও অভিযোগ আসছে যে যাত্রীরা পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
এমটি/ওএফ