পররাষ্ট্রসচিব
তারেককে দেশে ফেরানো নিয়ে স্পষ্ট বার্তা নেই
দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো নিয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা দেননি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, উনি (তারেক) যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের কৌশলগত সংলাপে তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রসচিব।
বিজ্ঞাপন
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমার জানামতে উনি (তারেক) রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের যে সমস্ত লিগ্যাল মেকানিজমগুলো রয়েছে, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। মিউচুয়াল লিগ্যাল এসিসটেন্স বা এক্সটাডিশন নিয়ে আমাদের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের (যুক্তরাজ্য বা আমাদের দিক থেকে হতে পারে) যেন সহজে আনা যায় সে বিষয়ে বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আমরা আলাপ করছি। আমরা আজকে বেশি আলোচনা করেছি- যুক্তরাজ্যে যারা নিয়মিত যাচ্ছেন, কিন্তু আসছেন না বা ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে ঢুকে পড়ছেন। সেই ব্যাপারে আলোচনাটা বেশি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ আছে। তারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়, কোনো ভায়োলেন্স যেন না হয়। বলেছি, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা আরও বলেছি, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারে কাজ করছি।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার অনেক অর্থ থাকতে পারে। জনগণ ভোট দেবে, এটাও তো অংশগ্রহণ। কোনো পার্টি অংশগ্রহণ করবে বা করবে না এটা তাদের ব্যাপার। আসল হচ্ছে, জনগণ যেন তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারে।
নির্বাচন নিয়ে ব্রিটেনের কোনো পরামর্শ ছিল কী না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তাদের কাছে কোনো সহযোগিতা চাইলে তারা রেডি আছে। আমরা বলেছি, এটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমাদের নির্বাচন কমিশন আইনের মাধ্যমে করা হয়েছে। তাদের চাওয়া সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, ভায়োলেন্স কম হবে। আমরা বলেছি, এটাতে আমাদের দ্বিমত নাই।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য মধ্যস্থতার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কী না-জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, না। আমরা যদি কোনো সহযোগিতা চাই, তা দেবে তারা।
সংলাপে আলোচনার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসসচিব বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু, অভিবাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু ও বিনিয়োগ-বাণিজ্যের বিষয় এসেছ। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, গভর্নমেন্ট ইস্যু এসেছে, মানবাধিকার বিষয় এসেছ। সব বিষয়ে আমরা তাদের আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তারা অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও সহযোগিতা করতে চায়। বিশেষ করে,তারা একটা এমওইউ করার বিষয়ে আগ্রহী।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্য ৯ থেকে ১০ পারসেন্ট হারে বাড়ছে। বাণিজ্য ৬ বিলিয়ন অতিক্রম করেছে। আমরা জিএসপির পরবর্তীতে সুযোগ-সুবিধার কথা বলেছি।
সংলাপে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টন।
বার্টন বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি এগিয়ে নিয়েছি, যা শক্তিশালী থেকে আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আমরা একটি আধুনিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে যাচ্ছি। এবার চমৎকার ও গঠনমূলক কৌশলগত সংলাপ হয়েছে।
এনআই/এমজে