পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে বিতর্ক
ইসি সঠিক, বিভ্রান্তির মূলে ইইউ!
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাজেট স্বল্পতায় বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তবে জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর কারণে ইসির বক্তব্যের অন্য কথা জানিয়েছে ইইউ মুখপাত্র।
ইইউ মনে করছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে এখন তাদের পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠালে উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। তবে নিজেদের বাজেট স্বল্পতার কথা স্পষ্টভাবেই চিঠির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) জানিয়েছে। সিইসিকে দেওয়া ইইউর চিঠিটি ঢাকা পোস্টের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব জানিয়েছিলেন, বাজেট স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ দল আসছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে হেড অব ডেলিগেশন রয়েছেন, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে একটি মেইল পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ৬ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে তিনি যে সাক্ষাৎ করেছিলেন সেটা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
মেইলে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ইতোমধ্যে তাদের সদর দপ্তর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তাদের যে পূর্ণাঙ্গ একটি মিশন নির্বাচন (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন) পর্যবেক্ষণে পাঠানোর আর্থিক বিষয় ছিল, ডিউ টু বাজেট; এটার কারণে তারা আপাতত নামঞ্জুর করেছেন। আপাতত ইইউ সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
ইউরোপীয় কমিশনের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র নাবিলা মাসরালি বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ মিশন না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেন। বাজেট সংকটের কারণে ইইউ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না —এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া নির্বাচন অনুসন্ধান মিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ যেসব আন্তর্জাতিক মান মেনে চলার অঙ্গীকার করেছে, তার ভিত্তিতে আসন্ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষেণ মিশন পাঠানো কার্যকর, ফলপ্রসূ এবং সমীচীন হবে কিনা, সে বিষয়ে স্বাধীনভাবে সঠিক তথ্য সংগ্রহ এবং কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করার জন্য ৬ থেকে ২২ জুলাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে স্বাধীন নির্বাচন অনুসন্ধান মিশন পাঠায়। স্বাধীন এই মিশনে চারজন ‘এক্সটার্নাল' বিশেষজ্ঞ ছিলেন বলে জানান তিনি।
তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কর্তৃপক্ষ, বিচার বিভাগ, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের সুপারিশ প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে ইইউ এর নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠানোর উদ্দেশ্য এই সময়ে পূরণ হবে না। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়েছে। বাংলাদেশের সরকার এবং নির্বাচন কমিশন স্বাগত জানালে ইইউ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য অন্য উপযুক্ত বিকল্পের খোঁজ করতে পারে।
এসআর/এসএম