সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতি প্রতিরোধে ই-জিপির (ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট) বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে আইএমইডির আওতায় সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিআই)। এরইমধ্যে সরকারি ক্রয়ের প্রায় ৬৫ শতাংশ এখন ই-জিপির মাধ্যমে হচ্ছে। বাকিগুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। 

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সরকারি ক্রয়বিষয়ক এক ওরিয়েন্টেশন সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের সিপিটিইউ সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। পরিকল্পনা কমিশন ও ইআরডি বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি)’ সদস্যদের জন্য এ সেমিনারের আয়োজন করে সিপিটিইউ। 

সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. সোহেলের রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আক্তার খান। বক্তব্য দেন ডিজেএসফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান। 

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, এখন পর্যন্ত ৫২টি ব্যাংক ইজিপির রেজিস্ট্রেশন করেছে। সরকারি ১ হাজার ৪৩৮টি সংস্থার ১১ হাজার ৪৬৬টি প্রকিউরমেন্ট এনটিটি ই-জিপিতে কেনাকাটা করছে। এখন পর্যন্ত এই সিস্টেমে ১ লাখ ৮ হাজার ১১৫ জন ঠিকাদার রেজিস্টার্ডভুক্ত হয়েছেন। দরপত্র ডাকা হয়েছে ৭ লাখ ৩৬ হাজার ১০৯টি। এগুলোর আর্থিক মূল্য প্রায় ৮ লাখ ৭১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। কনস্ট্রাক্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৭টি। এগুলোর আর্থিক মূল্য ৫ লাখ ৪২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, আইএমইডিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে আইএমইডির অফিস করা হচ্ছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া সরকারি ক্রয় আইনে সংস্কার এনে সংশোধনী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সিপিটিইউকে এরইমধ্যে কর্তৃপক্ষ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এখন কমপক্ষে দেড়শ জনবল নিয়োগ হবে। সক্ষমতা বাড়বে। 

তিনি আরও বলেন, স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আইএমইডিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। ফলে প্রকল্পের মূল্যায়ন খুব দ্রুত করা যাবে। অনিয়মের সুযোগ কমবে। বিভিন্ন প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে এবং সময় নিয়ে করা হচ্ছে। যাতে কোনো ভুলত্রুটি না হয়। তাড়াহুড়া করলে সঠিক রিপোর্ট আসে না। সিস্টেমে গলদ থাকায় আমরা ভালোভাবে কাজ করতে পারি না। এসব বিষয় দূর করার কাজ চলছে। 

সভাপতির বক্তব্যে শোহেলের রহমান চৌধুরী বলেন, ঠিকাদাররা তার তথ্য ঠিকমতো দেয় না। এখন একটা ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে ঠিকাদারদের সব তথ্য থাকবে। লুকোচুরি বা তথ্য গোপন করতে পারবে না। আইন মেনে কাজ করলে সহজ হয়। আর না মেনে করলে কঠিন হয়। এগুলো নিয়ে আমরা তিন বছর ধরে কাজ করছি। এখন ধীরে ধীরে পরিবর্তন চোখে পড়বে। 

অনুষ্ঠানে ই-জিপির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, ই-জিপির মাধ্যমে টেন্ডার সাবমিশন হওয়ায় দুর্নীতির সুযোগ কমে গেছে। যোগ্য ঠিকাদার ছাড়া অন্যরা কাজ বাগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পান না। সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে হওয়ায় পরস্পর যোগসাজশে অদক্ষ কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ নিতে পারেন না। যেকোনো অনিয়ম খুব সহজেই ধরা সম্ভব হয়। 

এসআর/জেডএস