সম্পত্তি ও আর্থিক বিষয়ে হিন্দু পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। অথচ তিন দশক ধরে হিন্দু নারীদের সম্পত্তিতে অধিকার নেই মর্মে মিথ্যা অজুহাত তুলে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি মহল। তারা হিন্দু সসম্প্রদায়ের মানুষের পারিবারিক শান্তি, সম্প্রীতি ও ভারসাম্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘হিন্দুশাস্ত্রীয় বিধি-বিধান সম্বলিত পার্সোনাল ল তথা উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তনের চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান’ শীর্ষক এক মানববন্ধনে বক্তারা এ কথা বলেন। মানববন্ধনের আয়োজন করে হিন্দু আইন পরিবর্তন প্রতিরোধ সম্মিলিত পরিষদ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৩৭ সালের হিন্দু নারীদের সম্পত্তিতে অধিকার সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী তার সম্পদের মালিক হন। ছেলেদের মধ্যে সেই সম্পত্তি সমানভানে বণ্টন করলেও তিনি একজন ছেলের সমান সম্পত্তি পাবেন। এদিকে বিয়ের সময় বাবা তার মেয়েকে এক ছেলের সম্পত্তির অর্থমূল্যের উপঢৌকন বা সামর্থ্য অনুযায়ী আসবাব ও অলংকার দেন। তাহলে তো নারী দুইদিক থেকে সম্পত্তি পেলেন। অর্থাৎ নারীদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

বক্তারা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের মেয়ে ও সম্পত্তি রক্ষা করতে পারছেন না। তার ওপর উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তনের নামে নানা চক্রান্ত  সনাতনীদের আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাই হিন্দু নর-নারীদের প্রতি আহ্বান আপনারা জেগে উঠুন। না হলে আইনের ফাঁক দিয়ে সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে।

মানববন্ধনে বক্তারা ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, সম্প্রদায়িক সহিংসতার চির অবসান; সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন; সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন; হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ-মন্দির, উপসনালয় এবং বাড়িঘর ও ব্যবসা-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, সম্ভ্রমহানি ও হত্যার উপযুক্ত বিচার; সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক হিন্দুদের ওপর যে ন্যাক্কারজনক চরম অপমানকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয় তার চির অবসান এবং দেশ ও জাতির সামগ্রিক কল্যাণ ও ঋদ্ধি অর্জনে সম অংশীদারিত্বে জীবন ধারণ ও যাপনের পূর্ণ অধিকার।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সনাতন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী শ্যামল কুমার রায়, ভক্ত সংঘ সোসাইটি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নিত্যগোপাল ঘোষ ও আইনজীবী জে কে পালসহ আরও অনেকে।

ওএফএ/কেএ