ভুয়া মেজর পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মহিউদ্দিন মজুমদার নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশের র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মধ্য রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন টিক্কা পাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২ এর একটি দল।

এ সময় তার কাছ থেকে ৩টি মোবাইল, সিমকার্ড ৬টি, ২টি ইউএনএইচসিআর-এর সিল, ২টি সিল প্যাড, চেক বই এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরের নাম, ঠিকানা সম্বলিত প্যাড উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে র‌্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম জানান, আটক মহিউদ্দিন মজুমদার  সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের মৃত মোস্তফা মজুমদারের ছেলে তিনি। 

এএসপি শিহাব বলেন, সম্প্রতি একটি চক্র নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারি, বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি, এমডি সেজে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মালামাল ক্রয় আদেশ দিয়ে ভুয়া চেক দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন। এছাড়াও তাদের একটি সঙ্ঘবদ্ধ প্রতারক চক্র রয়েছে যার মাধ্যমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে ভুয়া নাম পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়িক লেনদেন করে এবং ভুয়া চেক প্রদানের মাধ্যমে জালিয়াতি করে থাকে।

বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী র‌্যাব-২ এর কাছে আইনি সহায়তা কামনা করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতার ভিত্তিতে গতকাল রাতে মহিউদ্দিনকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মহিউদ্দিন মজুমদার নিজেকে বড় বড় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি, এমডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনে মালামালের ক্রয় আদেশ দেন। পণ্য সরবরাহকারীকে দেওয়া কাগজে ব্যবহার করেন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের নাম, ঠিকানা ও সিলমোহর। ক্রয়কৃত মালামালের টকা তিনি নগদ পরিশোধ না করে বাহকের মাধ্যমে চেক পাঠিয়ে দেন। 

ভুক্তভোগী কোম্পানি প্রদানকৃত চেক দিয়ে টাকা উঠাতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় চেকগুলো ভুয়া। ভুক্তভোগীরা আসামিকে ফোন দিলে আসামির মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। চক্রটির স্থায়ীভাবে কোনো অফিস না থাকলেও বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের কাছে বিশ্বাস অর্জনের জন্য ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়ে মালামাল ক্রয়ের ডিল ফাইনাল করত। মহিউদ্দিন মজুমদার কোম্পানি থেকে মালামাল আনার জন্য নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার না করে অ্যাপসভিত্তিক ভাড়া গাড়ি দিয়ে মালামাল নিতেন।  

তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৬টির অধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মোহাম্মদপুর থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জেইউ/এসকেডি