মেয়েদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন এলাকায় বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স- গ্যাভির সহায়তায় এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। ১৫ অক্টোবর প্রথমে ঢাকা বিভাগে এই কার্যক্রম শুরু হবে। পরে পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে বাংলাদেশের মোট আটটি বিভাগে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। 

আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করে টিকাদান কর্মসূচিতে (ইপিআই) এইচপিভি টিকা সংযোজন করার সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে প্রথম ধাপে ঢাকা বিভাগের সকল জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভায় ‘এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৩’ শুরু হতে যাচ্ছে। 

প্রথম পর্যায়ে মোট ১৮ দিন এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে। তার মধ্যে প্রথম ১০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও স্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। পরবর্তী ৮ দিন নিয়মিত ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে ও স্থায়ী কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা প্রদান করা হবে। টিকা গ্রহণে উপযুক্ত মেয়েরা Vaxepi অ্যাপ অথবা www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন প্রায় ১২০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং ৬৮০টি মনোনীত টিকাদান কেন্দ্রে এইচপিভি টিকা নিতে পারবে। ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য বিভাগের মেয়েদেরও এই টিকা প্রদান করা হবে।

এই কর্মসূচির আওতায় ডিএসসিসি এলাকায় বসবাসরত ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী এবং স্কুলে পড়ে না এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৪৫১ জন মেয়েকে বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে। কর্মসূচির আওতায় ঢাকা বিভাগে ২৩ লক্ষ কিশোরীকে এই টিকা দেওয়া হবে। 

এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান বলেন, এই টিকাটি আমাদের মেয়ে শিশুদের জন্য খুবই দরকারি। এই রোগে আক্রান্ত হলে নারীদের জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। আর এ রোগটি শুধু নারীদেরই নয় বরং পুরুষদের মাঝেও ছড়ায়। তবে এ রোগে পুরুষদের চেয়ে নারীদের আক্রান্ত হার বেশি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাবও বেশি। তাই আমি আশা করব, সব মেয়ে শিশুরা এই টিকা নেবে। ভবিষ্যতে যেন এই টিকাটি যেন পুরুষদের জন্যও আনা হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাই। টিকাটি অনেক ব্যয়বহুল। সরকার এখন  বিনামূল্যে এই টিকা দিচ্ছে। সেজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।

করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, বাংলাদেশ সরকার জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) প্রতিষেধক টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে, যা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো, দেশের লাখ লাখ মেয়েকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে রক্ষার মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা। এই জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতি বছর হাজার হাজার নারীর জীবন কেড়ে নেয়।

এএসএস/এনএফ