বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ। রোববার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও ভারত সরকারের কূটনৈতিকবৃন্দ এবং তাদের বিভিন্ন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রতিনিয়তই বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে আসছেন। তাদের এসব বক্তব্য বিবৃতি জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এদেশের জনগণের নিজস্ব স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনভাবে নিজের ভোট দেবার অধিকার রয়েছে। জনগণই এদেশের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিদেশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য এদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকির পাশাপাশি এদেশের জনগণের মান মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে বলে আমরা মনে করি।

বক্তারা আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই স্বাধীনতা বিদেশি নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি অমর্যাদাশীল। রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকার নির্বাচনে জনগণের প্রতি আছা রাখবেন, জনগণের ভোটাধিকারকে সম্মান জানাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবতা আমরা লক্ষ্য করছি যে, বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল এমনকি সরকারের ভেতরেও বিদেশিদের প্রতি সহমর্মিতা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তারের কারণে আজকে প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলি আগ্রাসন। প্রায় দশ হাজার মানুষ আজ মৃত্যুবরণ করেছে।

তারা আরও বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ আজকে এদের কারণেই। ইরাক, লিবিয়া, লেবানন, আফগানিস্তান, সিয়েরা লিওনসহ অসংখ্য রাষ্ট্র আজকের ধ্বংস হয়ে গেছে এদের প্রভাব বিস্তারের কারণে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে বিশৃঙ্খলাও থাকতে পারে তা সমাধানের দায়িত্ব এই দেশের জনগণের। আমরা কোনোভাবেই বিদেশি আগ্রাসন মেনে নেব না। আমরা সরকারের কাছে দাবি রাখতে চাই এই বিদেশি আগ্রাসন এবং বিদেশিদের নগ্ন দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে আপনারাও দেশের জনগণের প্রতি আস্থা রাখুন। অযথাই দেশের অভ্যন্তরে বৈদেশিক অপশক্তি ডেকে আনবেন না। যারা রোহিঙ্গা ইস্যু এখনো জিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তারা করছেন না তাদেরকে কেন আমরা ডেকে আনব।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, সংগঠনের সদস্য সচিব আলহাজ্ব একে.এম খুরশেদ আলম,বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট ড.মশিউর মালেক, অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান, ডা. মালেক ফরাজী, ডা.আমিনুল ইসলাম, শেখ ফরিদ প্রমুখ।

ওএফএ/এমএ