হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ তৈরির আহ্বান
শারীরিক পরিশ্রমের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব। শিক্ষার্থীরা নিরাপদে হেঁটে যাতায়াতে সক্ষম হলে সব বয়স ও সামর্থ্যবান জনগণ উপকৃত হবে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শহর গড়ে তুলতে হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) মোহাম্মদপুরের বেঙ্গলী মিডিয়াম হাই স্কুলের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াত’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা প্রমা সাহা বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত মাঠ-পার্কের অভাবে শিশুরা প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রমের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, যা ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে এবং শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয়। বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে সহজেই শিশুদের শারীরিক পরিশ্রমের চাহিদা পূরণ সম্ভব।
তিনি বলেন, হেঁটে যাতায়াতের ফলে গাড়ির সংখ্যা কমে দুর্ঘটনা ও যানজট হ্রাস এবং সময় ও যাতায়াত খরচ সাশ্রয় হয়। গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা কমে গেলে বায়ু দূষণ হ্রাস করার মাধ্যমেও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
বিজ্ঞাপন
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান বলেন, অসংক্রামক রোগ হ্রাসে শিশুদের বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় আমরা ২০১৪ সাল থেকে ‘হেঁটে যাই বিদ্যালয়, দেহ-মন-সুস্থ রয়’ শীর্ষক একটি কর্মসূচি পরিচালনা করছি। ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে হেঁটে যাতায়াত করলে শরীর ও মন ভাল রাখার পাশাপাশি দূষণ, দুর্ঘটনা, যানজট, জ্বালানি অপচয়সহ বিভিন্ন সমস্যা হ্রাসে অবদান রাখা সম্ভব।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, আজকের এ সেমিনারের মাধ্যমে শিশুরা তাদের হেঁটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা ও তার জন্য প্রয়োজনীয় সমাধান তুলে ধরেছে। এতে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব প্রদানের দক্ষতা বৃদ্ধি হলো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা সমাধানের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এডভোকেসি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, যা শিক্ষার্থীসহ সকল এলাকাবাসীর জন্য হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
আয়োজনের সভাপতি বেঙ্গলী মিডিয়াম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণচন্দ্র দাস বলেন, একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটতে হয়। ব্যক্তি যে যাতায়াত মাধ্যমই ব্যবহার করুন না কেন, হাঁটা তার প্রাথমিক যাতায়াত মাধ্যম। কাজেই হাঁটার পরিবেশ উন্নয়নে কোনো বিকল্প নেই।
সেমিনারে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে স্কুলে হেঁটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান তুলে ধরে।
এএসএস/এমজে