ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, ‘একাত্তর সালে বাংলাদেশে যে এত মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল তখন বিশ্ব মানবতা কোথায় ছিল? ৭১ এর যুদ্ধের পরে ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে ইন্ধন ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, পরবর্তীকালে আমাদের চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল, ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রতিটা ঘটনার পেছনে ইন্ধন ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।’

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।  

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইন্ধন দিচ্ছে, ২০১৩ ও ১৪ সালে অগ্নি সন্ত্রাসদেরও তারা ইন্ধন দিয়েছিল। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। একসময় বলা হত ব্রিটিশে সূর্য ডুবে না, কিন্তু আজকে তাদের পতন হয়েছে। ঠিক তেমনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একসময় পতন হবে, মানবতার জয় হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছেন, তারা আজ গাজাতে কী করছে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। গাজায় অসহায় মানুষকে যেভাবে হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনীরা তারপরও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হতে দিচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং যুদ্ধাপরাধীদের স্থান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার সনদের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যারা অপরাধ করেছে তাদের কোনো দেশ আশ্রয় দেবে না, কিন্তু তারা আশ্রয় দিয়ে প্রমাণ করেছে মানবাধিকারের প্রতি তাদের আদৌ কোনো ভক্তি শ্রদ্ধা নেই।’

সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দোপাধ্যয় বলেন, ‘বিশ্ব মানবতা আজ বারবার বিপন্ন হচ্ছে। বিপন্ন হচ্ছে বর্বরোচিত আক্রমণ, অমানবিক আচরণের ফলে। ১৯৭১ এর শিক্ষা থেকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যা আমাদের পররাষ্ট্র নীতিতে আছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। বাংলাদেশের মানুষ বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। বিপন্ন মানবতার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে আসে তখন শেখ হাসিনা তাদের আশ্রয় দেন। ফিলিস্তিনের মানুষ তাদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে তখনও কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ, সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়।’

সম্প্রীতি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফ আহমেদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাবি সিনেট সদস্য চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফ্রন্টের নেতা মাহবুব চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহবায়ক উত্তম বড়ুয়া প্রমুখ।

এমএসি/এসকেডি