চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার বাদীকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় হাসান মুরাদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) হাটহাজারী উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) হাটহাজারী থানা পুলিশের মাধ্যমে তাকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার হাসান মুরাদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। সম্প্রতি তার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি নিয়ে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকা পোস্টে ‘ফেস টু ফেস হলে খোদার কসম মার্ডার হবে- ছাত্রলীগ নেতার হুমকি’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

এর পরদিন (শনিবার) তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি পুলিশ। ডিবির একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী আহমেদ হোসেন সোহেল হাটহাজারীর উত্তর ফতেয়াবাদ দক্ষিণ পাহাড়তলী নন্দীরহাট এলাকার হাজী মো. মুছার ছেলে। তিনি ওই এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আগে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা হাসান মুরাদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে গত ২৯ অক্টোবর রাতে হোসেন সোহেলকে অপহরণ করে মারধর ও হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম আদালতে হাসান মুরাদসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। 

আদালত মামলাটি গ্রহণ করে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ নভেম্বর হাটহাজারী থানায় চার আসামির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। 

এরই মধ্যে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন অভিযুক্ত হাসান মুরাদ। একপর্যায়ে হাসানের একটি কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বলা হয়, ‘সোহেলকে বলবি, তাকে ঘরে গিয়ে মারব। সে মেডিকেলে পড়ে ছিল... কে গেছে দেখার জন্য? মেরে ফেলব। সোহেলদের সঙ্গে ফেস টু ফেস হলে খোদার কসম মার্ডার হবে। তাকে মেরে মেডিকেলে পাঠাই দিয়েছি কী হয়েছে? আমরা ওদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। ওরা বৈঠক ডাকছে। বৈঠকে আমাকে ওসি ও এসপি ফোন করছে’।

এরপর ১৪ ডিসেম্বর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি আবেদন করেন ভুক্তভোগী সোহেল। একই সঙ্গে তিনি অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম নাজমুন নাহার আদালতেও একটি আবেদন করেন। আবেদনটি গ্রহণ করে বিচারাধীন মামলার নথিতে যুক্ত করেন আদালত।

এমআর/কেএ