১৩ লোহার সেতু নির্মাণে নয়ছয়, দুদক অভিযানে সত্যতা
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ১৩টি লোহার সেতু নির্মাণ প্রকল্পে নয়ছয়ের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে।
প্রয়োজন নেই এমনও স্থানে আয়রন ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। এমনকি বাতিলকৃত প্রকল্প নথি জালিয়াতির মাধ্যমে আবার কাজ শুরুরও অভিযোগ রয়েছে। যদিও দুদকের অভিযানের আগেই অনিয়মের কারণে ৪ থেকে ৫টি ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের পটুয়াখালী অফিস থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুদক জানায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ১৩টি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অভিযানে জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ১৩টি আয়রন ব্রিজ নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগে এলজিইডির অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি কর্তৃক একটি তদন্ত করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ৪ থেকে ৫টি ব্রিজ নির্মাণ বন্ধ করে বাকিগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র তলব করা হয়েছে, যা যাচাই-বাছাই শেষে আইনি ব্যবস্থা নিতে দুদক টিম কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ১৩টি আয়রন ব্রিজ নির্মাণের কাজ অনুমোদন করে ২০২০ সালের মার্চে। কাজ বণ্টনে অনিয়ম, নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান, ব্রিজ নির্মাণে অতিরিক্ত ব্যয়সহ নানা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাতিল করা হয় সেই কাজ। কিন্তু চলতি বছরের জুন মাসে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের (আইবিআরপি) অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী এসব ব্রিজের কাজ চলমান। অভিযোগ করা হয়, কাজ বাতিল ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান প্রকৌশলীর দেওয়া নির্দেশনা নথি থেকে সুকৌশলে মুছে ফেলা হয়েছে। এরপর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে ব্রিজ নির্মাণের ফাইল। ফলে এলজিইডির দপ্তরের কাগজপত্রে ১৩টি ব্রিজের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও অন্য সব জায়গার নথিতে রয়ে গেছে এগুলোর নির্মাণকাজ। ১৩টি ব্রিজ নির্মাণের কাজ পান মাত্র দুজন ঠিকাদার। যেসব স্থানে ব্রিজের প্রয়োজন নেই, রাস্তা নেই কিংবা জনমানবের চলাচল কম, সেসব স্থানে ব্রিজ করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরএম/জেডএস